স্কুলের সমস্যা বাইরে এনে রাস্তা অবরোধ, ভোগান্তি
ভ্যন্তরীণ সমস্যায় স্কুলে গোলমাল বেধেছিল। তার জেরেই অফিসের ব্যস্ত সময়ে দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে শুক্রবার কার্যত অবরুদ্ধ করে ফেলা হল দক্ষিণ কলকাতাকে। প্রচণ্ড গরমে অবরোধের জেরে নাকাল হলেন অসংখ্য মানুষ। এমনকী, মহাকরণের যাওয়ার সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের রুটও ঘুরিয়ে দিতে হল।
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ অবরোধ শুরু হয় দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আশুতোষ মুখার্জি রোডে। যদুবাবুর বাজারের সামনে ওই অবরোধ করেছিলেন খালসা স্কুলের শিক্ষিকা-ছাত্রী-অভিভাবকেরা। তাঁরা সংখ্যায় প্রায় দুশো জন ছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, অবরোধের ফলে প্রথমে দক্ষিণমুখী গাড়িগুলি আটকে পড়ে। পরে ক্রমাগত চাপ বাড়তে থাকে উত্তরমুখী যান চলাচলেও। কিছুক্ষণের মধ্যেই দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার সংযোগকারী ওই রাস্তা কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়। গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো সেই সময় নাগাদই কবি নজরুল মেট্রো স্টেশনে এক ব্যক্তির ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’র জেরে মেট্রো চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। ফলে রাস্তায় অন্য দিনের চেয়ে বেশি চাপ ছিল বলে পুলিশের বক্তব্য। অন্য দিকে, বিএসএফের কনস্টেবল পদের নিযুক্তির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড না পেয়ে এ দিনই বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ নিজাম প্যালেসের কাছে এ জে সি বসু রোড ও ক্যামাক স্ট্রিট সংযোগস্থলে অবরোধ করেন একদল পরীক্ষার্থী। সেই অবরোধের জেরেও ওই দুই রাস্তায় যানজট হয় বলে জানায় পুলিশ।
ব্যস্ত সময়ে এ ভাবেই পথ আটকে ‘প্রতিবাদ’ জানাল স্কুলছাত্রীরা।
ভুগলেন অসংখ্য মানুষ। শুক্রবার। ছবি: সঞ্জয় সাউ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালের ব্যস্ত সময়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরে (এসপ্ল্যানেড-বিবাদী বাগ চত্বর) বাস-সহ অন্যান্য গাড়ির সংখ্যা বেশি থাকায় অবরোধের জেরে অল্পক্ষণের মধ্যেই দুর্ভোগ চরমে ওঠে। যানজট এড়াতে একে একে শরৎ বসু রোড, শম্ভুনাথ পণ্ডিত রোড, হরিশ মুখার্জি রোড, ডি এল খান রোড, বেলভেডিয়ার রোড-সহ অন্যান্য রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘোরাতে শুরু করে পুলিশ। ছোট-বড় বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ির চাপ ক্রমাগত বাড়তে থাকায় প্রায় স্তব্ধ হয়ে পড়ে দক্ষিণ কলকাতার যান চলাচল।
কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এত ভোগান্তি? পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত খালসা স্কুলে। স্কুলের বর্তমান টিচার-ইনচার্জ ভূপিন্দর কৌর বলেন, “এই স্কুলটি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হলেও ১৬ জন শিক্ষিকার মধ্যে মাত্র ৩ জন সরকার কর্তৃক নিযুক্ত। শিক্ষিকারা অবসর নেওয়ার পরে নতুন শিক্ষিকা নিয়োগের ব্যাপারে কখনও সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে আবেদন করা হয়নি। এ ভাবে ধীরে ধীরে স্কুলটিকে বেসরকারিকরণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। নিজেদের পরিচালন সমিতির সদস্য বলে দাবি করে কয়েক জন আমাকে এই পদ থেকে সরে যেতেও বলেছেন।” অন্য দিকে, নিজেকে পরিচালন সমিতির সভাপতি পরিচয় দিয়ে অমরদীপ সিংহ নামে এক ব্যক্তি বলেন, “টিচার-ইনচার্জের অভিযোগ মিথ্যা। স্কুল বেসরকারিকরণের কোনও ইচ্ছেই আমাদের নেই।”
তবে সমস্যা যাই-ই হোক না কেন, তার ‘প্রতিবাদ’ জানাতে কেন রাস্তা অবরোধ করে হাজার হাজার মানুষকে বিপাকে ফেলা হল, তার কোনও উত্তর মেলেনি বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে। কেন দু’ঘণ্টা ধরে ওই অবরোধ চলতে দেওয়া হল, তার কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি পুলিশকর্তাদের কাছেও। এর আগেও এ রকম নানা কারণে রাস্তা আটকে রেখে বিপাকে ফেলা হয়েছে যাত্রীদের। নানা ‘তুচ্ছ’ কারণে ট্রেন আটকে রাখার প্রতিবাদ করে কোনও কোনও সময়ে যাত্রীরা নিজেরা পথে নেমে অবরোধকারীদের তুলে দিয়েছেন।
ডিসি (ট্রাফিক) দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১২টা নাগাদ যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। প্রয়োজন অনুযায়ী প্রথমে উত্তরমুখী এবং পরে দক্ষিণমুখী গাড়িগুলিকে ছাড়া হয়েছে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.