ভারতে টেলিকম ব্যবসা চালু রাখতে টেলিনরের নতুন অংশীদার কে হবে, সেই নাম জানাতে নরওয়ের সংস্থাটিকে আরও কিছুটা সময় দিল বিদেশি বিনিয়োগ পর্ষদ (ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ড বা এফআইপিবি)। সাধারণত পুরনো অংশীদারের বদলে নতুন কোনও সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে এ ধরনের যৌথ উদ্যোগ গড়তে অনুমোদন নিতে হয় পর্ষদের কাছে। তার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ায় অংশীদার সংস্থার নাম জানানো জরুরি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আপাতত সেই নাম প্রকাশের দায় থেকে টেলিনরকে মুক্তি দিয়েছে পর্ষদ। একই সঙ্গে এখনই নাম না-জানানো সত্ত্বেও ওই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে তারা। এই প্রসঙ্গে, শুক্রবার কলকাতায় ইউনিনরের এমডি সিগভে ব্রেক্কে জানান, ভারতে টেলিকম পরিষেবা ব্যবসা চালু রাখতে নতুন ‘সঙ্গী’র খোঁজ শুরু করেছে সংস্থা। তাঁর কথায়, “পাঁচ-ছ’টি সংস্থার সঙ্গে আমাদের কথা চলছে। নতুন অংশীদারের নাম চূড়ান্ত না হলেও এ ব্যাপারে আপাতত সায় দিয়েছে এফআইপিবি।” |
বেলেঘাটার সুড়া যুবক বৃন্দ ক্লাবের মাঠে সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ব্রেক্কে।-নিজস্ব চিত্র |
ব্রেক্কে জানান, বিষয়টি বিবেচনার জন্য তাঁরা এফআইপিবি-র কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। তারা প্রথমে জানায়, নয়া অংশীদার চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রক্রিয়াটি চালু করা যাবে না। তখন এফআইপিবি-কে তাঁরা জানান, প্রক্রিয়াটি চলাকালীনই অংশীদার চূড়ান্ত হবে এবং তার নামও পর্ষদকে জানানো হবে। তাঁর দাবি, এফআইপিবি সেই আর্জি মেনেছে।
টু-জি বিতর্ক আদালতের দরজায় গড়ানোর পর থেকেই ভারতীয় অংশীদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে লাইসেন্স বাতিল হওয়া বিদেশি টেলি পরিষেবা সংস্থাগুলির একাংশ। এদেরই অন্যতম নরওয়ের সংস্থা টেলিনর, যারা ইউনিটেক-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ইউনিনর গঠন করেছিল। কিন্তু এখন ইউনিটেকের সঙ্গে সেই যৌথ উদ্যোগ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চায় তারা। টেলিনর চায়, নতুন সংস্থায় তাদের অংশীদারি হবে ৭৪%। এবং ইউনিনরের সব সম্পদ ও কর্মীদের নতুন সংস্থায় স্থানান্তরিত করা হবে। কিন্তু এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ইউনিটেক। বর্তমানে ইউনিনরে টেলিনরের অংশীদারি ৬৭.৫%।
ইউনিনরের এমডি জানান, নতুন অংশীদারের ক্ষেত্রে দু’টি শর্ত পূরণ করতে হবে। ১) যৌথ উদ্যোগে টেলিনরের অংশীদারি হবে ৭৪% ও তারাই সংস্থা পরিচালনা করবে। ২) অংশীদার শুধু লগ্নি করবে এবং এই ব্যবসায় তারও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থাকবে। ব্রেক্কে জানান, যে ১৩টি সার্কেলে ইউনিনর ভাল ব্যবসা করছে (যেমন, কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ), নতুন নিলামে লাইসেন্স পেতে তারা পূর্ণোদ্যমে ঝাঁপাবেন।
এ দিকে, কর্মী, ডিলার, খুচরো বিক্রেতা, গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতে বিভিন্ন শহরে প্রচারও শুরু করেছে সংস্থাটি। ব্রেক্কে-সহ সংস্থার পদস্থ কর্তারাও সেখানে যাচ্ছেন। আমদাবাদ, বারাণসী, চেন্নাইয়ের পরে এ দিন কলকাতায় সেই প্রচারে এসেছিলেন তাঁরা। বেলেঘাটা এলাকার বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ইউনিনরের প্রচার অভিযানে অংশ নেন তাঁরা। সংস্থাটির দাবি, লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশের পরেও তাদের নতুন গ্রাহকের সংখ্যা বেড়েছে। এবং ‘মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি’-র পরেও সার্বিক ভাবে নতুন গ্রাহকের সংখ্যা বেশি। |