|
|
|
|
ব্লক অফিস ভাঙচুর করে হেনস্থা হরিশচন্দ্রপুরে, অভিযুক্ত তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদাদাতা • হরিশ্চন্দ্রপুর ও শামুকতলা |
কংগ্রেসের উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে গিয়ে বিডিও-র সামনেই তাঁর অফিসে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একদল নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক অফিসের ঘটনা। বিডিও সজল তামাংয়ের অভিযোগ, তাঁকেও হেনস্থা করা হয়েছে এবং যুগ্ম-বিডিওকে গালিগালাজ করে মারধরের চেষ্টা হয়। কয়েক জন কর্মী বাধা দিলে তাঁদেরও হেনস্থা করা হয়। ভাঙচুর করা হয় বিডিও-র টেবিলের কাচ। বিডিও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিডিও ‘নিগ্রহ’ এবং সরকারি দফতরে চড়াও হয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং সমিতির অন্তর্গত ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনাচক্রে এ দিনই শরিকি সংঘাত কমাতে জেলা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত পর্যায় অবধি কংগ্রেস তৃণমূল জোটের সমন্বয় কমিটি গঠনের দাবি তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের সলসলাবাড়িতে এ দিন এক কর্মিসভায় প্রদীপবাবু বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা তৃণমূলের কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই আক্রমণ কাম্য নয়। সংঘাতও চাই না। আমরা চাই, জেলা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত অবধি উন্নয়ন এবং পরিকল্পনার কাজের জন্য সমন্বয় কমিটি গড়া হোক।” কিন্তু ওই প্রস্তাব তৃণমূলের কাছে দলের তরফে কী ভাবে দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করেননি প্রদীপবাবু। তাঁর কথায়, “যথা সময়েই পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, হরিশচন্দ্রপুর ১ ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে এ দিন কথা বলতে বিডিও-র ঘরে ঢুকেছিলেন তৃণমূলের একাধিক নেতা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, সে প্রশ্ন তুলে হইচই শুরু হয়। অভিযোগ, ওই সময় এক নেতা ঘুষি মেরে বিডিও-র টেবিলের কাচ ভেঙে দেন। প্রতিবাদ করায় যুগ্ম-বিডিওকে মারতে উদ্যত হন এক নেতা। দফতরের কর্মীদের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি মহিলা কর্মীদের উদ্দেশে অশালীন ভাষায় কথাবার্তার অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কর্মীদের অভিযোগের পাশাপাশি চার তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পুলিশে পৃথক অভিযোগ জানান বিডিও সজল তামাং। ব্লক অফিসের কর্মী দেবাশিস কুণ্ডু, গোপাল সরকার বলেন, “যা ঘটল তাতে, নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।”
হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তোবারক হোসেন-সহ চার জন নেতা বিডিও-র ঘরে ঢুকেছিলেন। তোবারকের দাবি, “অভিযোগ শুনেও বিডিও আমল দেননি। সেজন্য কয়েক জন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার পরেই চলে এসেছি। এখন শুনছি, ভিত্তিহীন নানা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।”
তৃণমূলের অভিযোগের তির যাঁর দিকে, রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের সেই কংগ্রেস উপ-প্রধান সেকিল আহমেদ সিরাজি অবশ্য বলেন, “দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন।” হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি বিমানবিহারী বসাক জানান, শুক্রবার সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “অভিযুক্তদের না ধরা হলে আরও বড় আন্দোলন হবে।”
চাঁচলের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক অশোক সরকার বলেন, “তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী ভাঙচুর চালানোর সময়ে কর্মীদের মারতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিডিও-কে বলেছি এফআইআর করতে।”
জেলাশাসক শ্রীমতী অর্চনা এ দিন বলেন, “আমিও এ ব্যাপারে বিশদে খোঁজখবর নিচ্ছি।” |
|
|
|
|
|