ভূগর্ভের জল বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের নতুন সরকার। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই নিয়ন্ত্রণের রাস্তা নিচ্ছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি জানিয়ে দেন, সরকারের অনুমতি ছাড়া আর্সেনিকপ্রবণ এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য অথবা গবেষণার নামে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভবিষ্যতে ভূগর্ভের জল ব্যবহার করতে পারবে না। এই উদ্দেশ্যে আইন সংশোধনের জন্য বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনে বিল আনা হবে।
মন্ত্রী জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আর্সেনিকপ্রবণ ছ’টি জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের জন্য গভীর নলকূপ বসাচ্ছে। ওই সব সংস্থার অনেকের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু এই ধরনের গভীর নলকূপ অকেজো হয়ে যাওয়ার পরে সেগুলি মেরামত করার জন্য আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। গবেষণার নামেও একই কাজ চলছে। তাই গ্রামাঞ্চলে কেউ কোথাও গভীর নলকূপ বসাতে চাইলে সরকারের আগাম অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হবে নতুন আইনে।
পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার যে-সব এলাকায় লবণাক্ত জলের পরিমাণ বেশি, সেখানে পাইপলাইনে মিষ্টি পরিস্রুত জল সরবরাহের কাজে হাত দিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। মন্ত্রী জানান, রাজ্যে এই প্রথম ‘পিপিপি মডেল’ বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে দু’টি পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। একটি প্রকল্প হবে পূর্ব মেদিনীপুরে দিঘার কাছে। অন্যটি হবে উত্তর ২৪ পরগনায় বসিরহাট বা টাকির কাছাকাছি। ইছামতীর জল ব্যবহার করা হবে সেখানে।
রাজ্য সরকার ওই সব প্রকল্পে টাকা খরচ করবে না। সেগুলি তৈরি, জল সরবরাহ এবং রক্ষণাবেক্ষণের পুরো দায়িত্ব থাকবে বেসরকারি অংশীদারের হাতে। জল সরবরাহ বাবদ যে-সব জায়গা থেকে মাসুল তোলা সম্ভব, সেখান থেকে তারা মাসুল নেবে। দ্বীপের সংখ্যা বেশি বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অবশ্য পাইপলাইনে জল দেওয়া যাবে না। ওই সব দ্বীপে গভীর নলকূপ থেকে জল সরবরাহ করা হবে। নোদাখালি, হরিণঘাটা ও শিলিগুড়ির কাছে ফুলবাড়িতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের যে-সব জল শোধন প্রকল্প আছে, সেখান থেকে পানীয় জল সরবরাহের সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বিক্রির জন্য বোতলে পরিস্রুত জল ভরার উদ্যোগও চলছে বলে জানান সুব্রতবাবু। |