পাঁচ বছর পরে অ্যাডভাইসরি কমিটির সভা
ফরাক্কা ব্যারাজ রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি স্বীকার কর্তৃপক্ষের
পাঁচ বছর পরে ফরাক্কা টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি কমিটি তাদের দ্বিতীয় বৈঠকে বসল বৃহস্পতিবার। ফরাক্কা ব্যারাজ প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ-কাজ পর্যালোচনার জন্য ২০০৭ সালে গঠিত হয়েছিল ওই কমিটি। দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে সেই কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ দিন অবশ্য উপস্থিত সদ্যরা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকে তীব্র সমালোচনা করেন। নিজেদের ‘গাফিলতি’র কথা অবশ্য মেনেও নিয়েছেন ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার অরুণকুমার সিংহ।
আড়াই ঘণ্টার বৈঠক উপস্থিত ছিলেন মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ৭ জন বিধায়ক, মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী-সহ প্রশাসনিক কর্তারা। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের ১১ জনের একটি প্রতিনিধি দলও এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অরুণকুমার বলেন, “ফরাক্কা ব্যারাজের সামগ্রিক রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে গাফিলতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ২০০৭ সালে টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি কমিটি গঠিত হলেও গত পাঁচ বছরে সেই কমিটির কোনও সভা হয়নি। এ নিয়ে বিধায়ক ও সাংসদেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে ফরাক্কা ব্যারাজের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে তাঁরা বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পাশাপাশি, এ বার থেকে প্রতি বছরই ওই কমিটির সভা হবে বলে তিনি জানান।
ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
এ দিনের বৈঠক শেষে অধীর বলেন “ফরাক্কা ব্যারাজের কাজকর্ম নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ব্যারজের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যথেষ্ট টাকা দেয়। রাজ্য সরকারকেও এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে। ফরাক্কা ব্যারাজের অ্যাফ্লেক্স বাঁধ, রাস্তা-ঘাট, নিকাশি ও লকগেটসব কিছুরই অবস্থা খারাপ। অথচ গত ৫ বছরে এই কমিটির একটিও সভা ডাকা হয়নি। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। সভায় সব ব্যাপারেই আলোচনা করা হয়েছে।”
মালদেহর বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী বলেন, “কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের একটি গ্রাম ইতিমধ্যেই গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন হয়েছে। ভাঙন বিধ্বস্ত গ্রামগুলির পরিস্থিতি নিয়ে একটি সমীক্ষা করে সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকে। তবে ভাঙন রোধের কাজে কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয় বাড়াতে হবে।”
ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক বলেন, “২০০৪ থেকে মুর্শিদাবাদে ভাঙন রোধের কাজ সেভাবে হয়নি। সুতির ১৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনে বিপন্ন। ধুলিয়ানের লক্ষ্মীনগর, ঘোষপাড়া, লালপুরের ভাঙন নিয়ে ৭ বছর ধরে চিঠি লেখালিখির পরে এবার টেন্ডার হয়েছে। ফরাক্কার পুঁটিমারি, অন্তদ্বীপা, আমতলা ও উমরাপুরের চারটি পয়েন্টে কালভার্ট তৈরি করে নিকাশি ব্যবস্থার জন্য বার বার বলা হলেও ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। প্রতিবছরই ওই সব এলাকায় বন্যা হয়। ব্যারাজের রাস্তা-ঘাট, নর্দমা, লকগেটের দুরবস্থার জন্য কর্তৃপক্ষ নিজেই দায়ী। কর্মী সংখ্যা কম থআকার অজুহাত দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতি বছর জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কর্মীদের প্রায় কোনও কাজই থাকে না। ভাঙনের কাজ হয় মাত্র চার মাস। বছরের বাকি সময়টা তো তাঁরা ব্যারাজ রক্ষণাবেক্ষণে কাজে লাগাতে পারেন! লকগেটগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। চলতি বছেরে জুনেই তো লকগেট ভাঙল। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে যে কোনও মুহূর্তে বড় কোনও বিপদ ঘটতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.