চিকিৎসক ছাড়াই শিবির, নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে রক্ত পরীক্ষা ছাড়াই স্কুল পড়ুয়াদের একাংশ রক্তাল্পতায় আক্রান্ত বলে শংসাপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বিরুদ্ধে। এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে বরাত পাওয়া ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল কোচবিহার জেলা সর্বশিক্ষা মিশন দফতর। ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার-১, ২, তুফানগঞ্জ-১ ও সিতাই ব্লকে পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খাগরাবাড়ি এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বরাত পায়। ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা বুধবার খোলটা হাই স্কুলের পঞ্চম অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এমবিএসএস চিকিৎসক ছাড়াই ওই শিবির হয়। এমনকী রক্ত পরীক্ষা না করে তারা চোখ দেখে কয়েকজন ছাত্রীর রক্তাল্পতা নির্ণয় করেন বলেও অভিযোগ। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই অভিভাবক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খোলটা হাই স্কুল কর্তৃপক্ষ জেলা সর্বশিক্ষা মিশন কর্তাদের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানান। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অধীর রায় বলেন, “এমবিএসএস চিকিৎসক তো ছিলেনই না। এমনকী রক্ত পরীক্ষা না করে ওই স্বেচ্ছাসেবী প্রতিনিধিরা স্রেফ চোখ দেখে রক্তাল্পতার ওষুধ লিখে দেন। নজরে আসতেই তা ডিপিইপি কর্তাদের জানাই।’’ দফতরের দুই আধিকারিককে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ওই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরে এদিনই তড়িঘড়ি সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন সর্বশিক্ষা মিশন দফতরের জেলা আধিকারিক আমিনুল আহসান। তিনি বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। বরাতের শর্ত অনুযায়ী সংস্থাটি এমবিবিএস চিকিৎসক নিয়ে স্কুলে শিবির করবেন। পাশাপাশি, রক্তের শ্রেণি ও হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করার কথা। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে জানার পর ওই সংস্থাটিকে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট দেখে পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার ভুবেশ কুমার ভুপক অবশ্য বলেন, “এমবিএসএস চিকিৎসক অসুস্থতার জন্য থাকতে পারেননি। তবে রক্ত পরীক্ষা না করার কথা ভিত্তিহীন।” নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উঠেপড়ে লেগেছে। ওই সংস্থাটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাব। মুখ্যমন্ত্রীকেও সবকিছু জানিয়ে লিখিত রিপোর্ট দেব।” কোচবিহারে-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরিমল বর্মনের বক্তব্য, সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সর্বশিক্ষা মিশন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। |