মুক্তির নির্দেশ এলেও জেলেই আটকে আরতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুরুলিয়া |
রাজ্যপাল মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। তবু বাড়ি ফিরতে পারছেন না ১৮ বছর জেল কাটানো আসামি বাঁকুড়ার তালড্যাংরার মহদা গ্রামের প্রৌঢ়া আরতি রায় সামন্ত। পুরুলিয়া মহিলা সংশোধনাগারের সুপার সুদীপ বসু বলেন, “আরতিদেবীর মুক্তি নির্দেশ আসার পরেই তাঁর আত্মীয়দের খবর দেওয়া হয়। এক আত্মীয় দেখা করেন। নানা সমস্যার জন্য তিনি আরতিদেবীকে ফেরত নিতে রাজি হননি।” |
|
সংশোধনাগারে আত্মীয়ের সঙ্গে আরতিদেবী। ছবি: সুজিত মাহাতো। |
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, চার ছেলে মেয়েকে খুনের ঘটনায় আরতিদেবীর জেল হয়েছিল। ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। সে দিন থেকেই তিনি জেলবন্দি। ১৯৯৭-এর জানুয়ারি মাসে বাঁকুড়া জেলা আদালত আরতিদেবীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দণ্ডিত করে। তারপর থেকে ওই মহিলা বাঁকুড়া ও মেদিনীপুর ঘুরে বর্তমানে পুরুলিয়া মহিলা সংশোধনাগারে রয়েছেন। খুনের ঘটনার কয়েক দিন পরেই তাঁর স্বামী কালীপদ রায় সামন্তের মৃত্যু হয়। রাজ্যপাল যে ৪০ জন বন্দির মুক্তি ঘোষণা করেছেন, তাঁদের মধ্যে এক মাত্র মহিলা এই আরতিদেবী। এ দিন সংশোধনাগারে আরতিদেবীর সঙ্গে দেখা করেন তাঁর ভিক্ষাছেলে শম্ভু মুখোপাধ্যায়।.তিনি বলেন, “ভিক্ষামায়ের সঙ্গে মাঝে মধ্যে দেখা করতে আসি। মুক্তির খবরে খুশি হলেও তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্না করে সংসার চালাই। স্ত্রী মানসিক অসুস্থ, মায়ের শরীরও ভাল নয়। ওঁর পরিবারেও কেউ নেই। কে ওঁকে দেখবে?” তিনি জানান, দূর সম্পর্কের আত্মীয়েরাও তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে মানা করেছেন। তাই ওঁকে ফেরত নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন।
শম্ভুবাবুর সঙ্গে আরতিদেবীর আরও এক আত্মীয় ত্রিলোচন রায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, “পানের ছোট গুমটি চালিয়ে সংসার চালাই। উনি মাসিমাকে তাই আমিও নিয়ে যেতে পারছি না।” আরতিদেবীর কাছে আকাশটা তাই গারদেই আটকে থেকে গেল। |
|