নদিয়ার হরিণঘাটার নগরউখড়া বাজারে একই পরিবারের চার জনকে খুনের ঘটনায় বুধবারও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে নিহত রবীন্দ্রনাথ পাত্রের ভাই যতীন্দ্রনাথ ও ভগ্নীপতি গৌরাঙ্গ দেবনাথকে মঙ্গলবার ডেকে পাঠানো হয় স্থানীয় থানায়। সেই দিন রাতেই গৌরাঙ্গবাবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যতীন্দ্রনাথের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। গৌরাঙ্গবাবুর স্ত্রী সোমাই ওই দিন ভোরে দেখতে পান তাঁর দাদা রবীন্দ্রনাথবাবুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে বাড়ির এক তলায় তাঁদের চায়ের দোকানে। সিঁড়িতে পড়ে ছিল মা রিনাদেবীর দেহ। দোতলার ঘরে পাওয়া যায় বৌদি সুমিতাদেবী, ভাইঝি রিনির দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা যখন বাড়িতে ঢোকে, জনবহুল এলাকা হলেও আশপাশের কেউ কিছুই টের পাননি। ওই বাড়িতে ঢোকার দরজাও ভাঙা হয়নি। তাই পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীদের মধ্যে এমন কেউ ছিল, যার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুদের ভালই সম্পর্ক। তাই সন্দেহ না করেই দরজা খুলে দেওয়া হয়। ভিতরে ঢুকে দুষ্কৃতীরা স্বমূর্তি ধরে। খুনের ধরনে পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা পেশাদার। জেলার এসপি সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “খুনিদের মধ্যে কেউ যে ওই পরিবারের পরিচিত, তা তদন্তে উঠে এসেছে।” |
কিন্তু কেন খুন? প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাজারের উপরে ওই দোতলা বাড়িটি বিক্রি করা নিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবু ও তাঁর ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। পুলিশ সুপার বলেন, “সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই এই ঘটনা কি না, তদন্ত হচ্ছে। তবে খুনের পিছনে অন্য কারণও আছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।” এই দিন রবীন্দ্রনাথবাবুর জ্যাঠামশায় বৈদ্যনাথ পাত্র বলেন, “ওদের দুই ভাইকেই ছোটবেলা থেকেই দেখছি। ওরা খুবই ভাল ছেলে। নিশ্চয়ই তৃতীয় কোনও পক্ষ এটা ঘটিয়েছে।” গৌরাঙ্গবাবুরও দাবি, “সম্পত্তি নিয়ে আমার শ্বশুরবাড়িতে বিবাদ থাকলেও এমন কাণ্ড ঘটার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।” এ দিন কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার জাভা হালদারপাড়ায় সুমিতাদেবীর মা পারুল স্বর্ণকারও এক কথা বলেন। তাঁর কথায়, “সম্পত্তি নিয়ে আমার জামাইয়ের সঙ্গে তাঁর ভাইয়ের অনেক দিন বিবাদ। তবে চার জনকে খুনের পিছনে অন্য কারণ আছে কি না, পুলিশের উচিত তা-ও তদন্ত করে দেখা।” আই জি (দক্ষিণবঙ্গ) মিহির ভট্টাচার্য এই দিন যতীন্দ্রনাথ ও গৌরাঙ্গবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি বলেন, “তদন্তের স্বার্থে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |