গডকড়ীর মেয়াদ বাড়াতে সক্রিয় সঙ্ঘ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিজেপি সভাপতির পদে নিতিন গডকড়ীর মেয়াদ বাড়ানোর পথ প্রশস্ত করতে এ বার আসরে নামলেন আরএসএসের শীর্ষ নেতৃত্ব।
গত দু’দিন ধরে ভাইয়াজি জোশী, সুরেশ সোনি ও দত্তাত্রেয় হোসাবোলের মতো আরএসএসের তিন শীর্ষ নেতা দিল্লিতে রয়েছেন। গতকাল রাতে লালকৃষ্ণ আডবাণী, অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গডকড়ীদের সঙ্গে এক ‘গোপন’ আস্তানায় বৈঠক করেন তাঁরা। আজ সকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সচিবদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন সঙ্ঘের শীর্ষ নেতারা। সুষমা স্বরাজ বর্তমানে শ্রীলঙ্কা সফরে থাকার জন্য বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, এ বছরের শেষেই সভাপতি পদে মেয়াদ ফুরোচ্ছে গডকড়ীর। অর্থাৎ বিজেপি-কে গডকড়ীর নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচন লড়তে হলে সভাপতি পদে তাঁর মেয়াদ বাড়াতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সম্মতি ছাড়া সেটি সম্ভব নয়। গডকড়ীর হয়ে সেই প্রক্রিয়াটি মসৃণ করার লক্ষ্যেই আরএসএস নেতৃত্ব এ বার ময়দানে নেমেছেন।
প্রশ্ন হল, বিষয়টি নিয়ে এত আগে থেকে কেন সক্রিয় হল আরএসএস? সঙ্ঘ সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশে ভোটের কৌশল, বাবুসিংহ কুশওয়াহাকে বিজেপিতে আনা, ঝাড়খণ্ডে অংশুমান মিশ্রকে নিয়ে আসার মতো সিদ্ধান্তগুলি কার্যত একাই নিয়েছেন গডকড়ী। তার জন্য আডবাণী-সুষমাদের বিরাগভাজন হয়েছেন পড়েছেন তিনি। অংশুমান মিশ্র বিতর্কে অরুণ জেটলিও রুষ্ট হওয়ায় কার্যত দলের মধ্যেই ‘একঘরে’ হয়ে গিয়েছেন বিজেপি সভাপতি। আঁচ পড়েছে তাঁর নেতৃত্বেও। আবার সঞ্জয় জোশীকে সংগঠনের দায়িত্বে আনায় নরেন্দ্র মোদীও বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দলের সভাপতি পদে গডকড়ীর মেয়াদ বাড়াতে হলে স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা বাড়তি বাধা ডিঙোতে হবে সঙ্ঘ নেতৃত্বকে। এত আগে থেকে আরএসএসকে সক্রিয় হতে হল সে কারণেই।
গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হলে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠক ডেকে তা অনুমোদন করাতে হবে। কিন্তু তার আগে রয়েছে দলের সাংগঠনিক নির্বাচন। ফলে গোটা প্রক্রিয়াটি সারতে ৩-৪ মাস লেগে যাবে। এ কারণেও এখন থেকে তৎপর না করলে পরে ঝঞ্ঝাট বাড়তে পারে। আজকের বৈঠকে উপস্থিত এক শীর্ষ নেতা জানান, সঙ্ঘের নেতারা তাঁদের নিজস্ব শৈলীতে সকলের থেকে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত নেন। দলের মধ্যে কোন্দল যে ভাবে প্রকাশ্যে বেরিয়ে পড়ছে এবং তার জন্য যে গোটা দলকে খেসারত দিতে হচ্ছে, সেই বিষয়টিও সঙ্ঘের কাছে তুলে ধরেন অনেক নেতা। সঙ্ঘ নেতারা সকলকে একজোট হয়েই চলার পরামর্শ দেন।
বিজেপি সূত্রের মতে, গডকড়ীকে নিয়ে দলের নেতাদের যে ক্ষোভ রয়েছে, তা দূর করতেই সকলের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন সঙ্ঘ নেতারা। আডবাণীর বাড়িতে গিয়েও তাঁরা পৃথক বৈঠক করেন। বিজেপির উঁচু থেকে মাঝারি স্তরের নেতাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করে তাঁদের ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার সুযোগও করে দিচ্ছেন তাঁরা। যাতে সময় থাকতে ক্ষোভের হাওয়াটি বেরিয়ে যেতে পারে। একইসঙ্গে গডকড়ীকেও সংযত থেকে সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগেই গডকড়ীর সঙ্গে পৃথক আলোচনা সারেন সঙ্ঘ নেতারা। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আরএসএস নেতাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এই আলোচনা নিছকই সাংগঠনিক সমন্বয়ের বিষয়ে।” |