|
|
|
|
পর পর ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ চাষি-শিক্ষক-ব্যবসায়ী-চাকুরেরা |
‘কোর ব্যাঙ্কিং’ ব্যবস্থা চায় দক্ষিণ দিনাজপুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বালুরঘাট |
পর পর ছিনতাইয়ের ঘটনায় দক্ষিণ দিনাজপুরে সমস্ত ব্যাঙ্কে ‘কোর ব্যাঙ্কিং’ ব্যবস্থা চালুর দাবি উঠেছে। ব্যবসায়ী থেকে কৃষক, শিক্ষক থেকে সরকারি চাকরিজীবী কোর ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুবিধা চেয়ে সরব হয়েছেন সকলে। ইউবিআই, ইউকো, এলাহাবাদ, পাঞ্জাব ন্যাশনাল, অ্যাক্সিস, ইউনিয়ন, স্টেট ব্যাঙ্ক সহ বেশ কিছু রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ও তাদের শাখা মিলিয়ে জেলায় ৮৫ টি ব্যাঙ্ক রয়েছে। তার মধ্যে কিছু ব্যাঙ্কে কোর ব্যাঙ্কিং থাকলেও অধিকাংশ ব্যাঙ্কেই ওই পরিষেবা চালু না হওয়ায় নানা সমস্যায় গ্রাহকেরা। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “জেলায় অনেক ব্যাঙ্কে কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় সমস্যার বিষয়টি জানি। এ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নরকে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টির গুরুত্ব প্রকাশ করে সমস্ত ব্যাঙ্কে কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা চালুর আশ্বাস দিয়েছেন।” এ জেলার ৮ টি ব্লকে সমস্ত শাখা ব্যাঙ্কগুলিতে ‘কোর ব্যাঙ্কিং’ পরিষেবা না থাকায় টাকা জমা ও তোলার ক্ষেত্রে দূরত্বের সমস্যার পাশাপাশি সম্প্রতি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে আনার পথে ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। গত ছ’মাসে বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর মহকুমায় শিক্ষক থেকে ব্যবসায়ী মিলিয়ে ৬ জন ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার পরে কেপমারি ও ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। একটি ক্ষেত্রেও পুলিশ ঘটনার কোনও কিনারা করে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ। ৪ এপ্রিল গঙ্গারামপুরে স্থানীয় উত্তর জয়পুর প্রাথমিক স্কুলের বেতন বাবদ ওই স্কুলের শিক্ষক মলিন দাস ৬০ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তোলেন। সে সময় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শিক্ষক মলিনবাবুর টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে মোটর বাইকে করে পালিয়ে যায় দুই দুষ্কৃতী। ওই একই দিনে বংশীহারি থানার বুনিয়াদপুরে একটি সমবায় ব্যাঙ্কে শিক্ষকদের বিমার ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা জমা দিতে যান বেলপুকুর হাই মাদ্রাসার শিক্ষক মোজাম্মেল হক। তাঁর মোটর বাইকের বাক্স ভেঙে ওই টাকা ছিনিয়ে পালায় এক দুষ্কৃতী। ১৩ এপ্রিল দুপুরে বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রাক্তন সেনাকর্মী হরেকৃষ্ণ সরকার ২৫ হাজার টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুলে মোটর বাইকের ডিকিতে রাখেন। ওষুধ কেনার সময় এক দুষ্কৃতী বাক্স ভেঙে টাকা চুরি করে পালানোর সময় ধরা পড়ে যায়। জনতা ছিনতাইকারীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বালুরঘাটের ক্ষেত্রে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীরা অধরা থেকে গিয়েছে। কিছুদিন আগে তপন এলাকার ব্যবসায়ী মন্টু অধিকারী শহরের কংগ্রেস পাড়া এলাকার একটি ব্যাঙ্ক থেকে ২ লক্ষ টাকা তুলে বাড়ি ফেরার সময় তার টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে পালায় মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতী। মন্টুবাবু বলেন, “কোর ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা থাকলে বালুরঘাট শহরে আসার দরকার হত না। টাকা খোয়াতে হত না।” বালুরঘাট থানার সামনে এক বৃদ্ধের পেনশনের ৮ হাজার টাকা ছিনতাইরে ঘটনার পাশাপাশি একাধিক এ ধরনের ঘটনায় এখন গ্রামগঞ্জের মানুষও বালুরঘাটে গিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে সাহস পাচ্ছেন না। |
|
|
|
|
|