ঝড়-শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি কোচবিহারে
শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের তান্ডবে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে ওই ঘটনা ঘটে। মহকুমার অন্দরান ফুলবাড়ি, ধলপল, ভানুকুমারী, শালবাড়ি, বারোকোদালি, মহিষকুচি ও লাগোয়া পুরসভার কয়েকটি ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার বিঘের পর বিঘে সবজি ও শস্য খেত পুরোপুরি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। টিন ও টালির চালার তৈরি অন্তত এক হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রবিবার তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা নাটাবাড়ির বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জেলাশাসকের সঙ্গে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দেওয়ার ব্যাপারে কথাও বলেন তিনি।
এ দিন বিকেলে দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় হয়। ঝড়ে মহকুমাশাসকের বাংলোর সিড়ি ঘরের চাল উড়ে যায়। মহকুমাশাসক অগাস্টিন লেপচা বলেন, “ঝড়ের যা গতিবেগ ছিল তাতে গ্রামগঞ্জে ক্ষতির সম্ভবনা প্রবল। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।
কোচবিহারে ক্ষতিগ্রস্ত ভুট্টা খেত ঘুরে দেখছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।
এদিন বিকেলে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের ক্ষতিগ্রস্থ বিভিন্ন এলাকা সরোজমিনে ঘুরে দেখেন এলাকার বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধান। সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “সব মিলিয়ে ওই মহকুমায় প্রায় এক হাজার বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ফসলের মধ্যে ভুট্টার ক্ষতি সবচেয়ে উদ্বেগজনক।” জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “মহকুমার কয়েকটি এলাকায় শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ঘরবাড়ি ও কৃষির ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নিকেশ চলছে।” প্রাথমিক হিসাবে ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাঁচশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিডিও তাপস সিংহরায়। তিনি বলেন, “ত্রাণ বিলির জন্য তালিকা করা হচ্ছে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত দুটো নাগাদ ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। মুহুর্তের মধ্যে তান্ডব বেড়ে যায়। বক্সিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ে। মাটিতে ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটিও। এদিন সন্ধ্যে পর্যন্ত বক্সিরহাটে বিদ্যুৎ পরিষেবা মুখ থুবড়ে রয়েছে। ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টির দাপট থাকায় টিন, অ্যাসবেস্টস, টালির তৈরি ঘরের চাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দুটি ব্লকেই বিঘের পর বিঘে জমির ভূট্টা, কচু, করলা, ঝিঙে, ঢেড়স, পটল, বেগুন, লঙ্কা খেত লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ধান, পাট খেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আম ও লিচুর মুকুলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অন্দরান ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্র দাস বলেন, “এক বিঘে জমিতে বেগুন, ভেন্ডি, ডাঁটা ও লঙ্কা চাষ করেছিলাম। সবটাই শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।” পাট ও ভূট্টা চাষিদেরও মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। তাঁদের কয়েকজন জানান, ভূট্টা খেত সবটাই মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। এতে আর ফলন হবে না নিশ্চিত। শিলাবৃষ্টির দাপট নিয়ে কালীবাড়ির বাসিন্দা অঞ্জনা দাস বলেন, “শিলের আকার এতটাই বড় ছিল যে শব্দে ঘরে থাকা যাচ্ছিল না। চৌকির নিচে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পাই।” জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিছু এলাকা নিজে ঘুরে দেখে জেলাশাসককে ত্রাণের ব্যাপারে বলেছি।” বিকেলে ঝড়ের খবর পেয়ে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ জানান, সিতাই, আদাবাড়ি, গোসানিমারি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষিপ্ত ক্ষতির খবর মিলেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.