|
|
|
|
মা অগ্নিদগ্ধ, ছেলের হাতে মার খেল বাবা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
মায়ের গায়ে আগুন লাগানোর অভিযোগে বাবাকে মারধর করল ছেলে-পুত্রবধূ। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে। পুলিশের কাছে অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় খানাকুলের রাজহাটি গ্রামের বাসিন্দা বছর একচল্লিশের চম্পা অধিকারীকে ভর্তি করা হয়। তাঁর শরীরের আশি শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। চম্পাদেবীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন তাঁর স্বামী শচীন অধিকারী। তাঁরও গায়ে পোড়ার ক্ষত আছে। অধিকারী দম্পতির ছেলে সঞ্জয় বিয়ে করে হাওড়ায় থাকেন। রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ তিনি মাকে দেখতে এসেছিলেন হাসপাতালে। বাবাকে সামনে দেখে হাসপাতাল চত্বরেই মারধর শুরু করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী-ও। দেখাদেখি আশপাশের আরও লোক জুটে যায়। তাঁরাও মারধর শুরু করেন মধ্যবয়সী ব্যক্তিটিকে। গায়ের জামা ছিঁড়ে যায়। মহিলাদের হাতে উঠে আসে শচীনবাবুর মাথার মুঠো মুঠো চুল। কোনও প্রতিবাদ করেননি শচীনবাবু। পরে সঞ্জয়ই বাকি লোকজনকে ঠেকান। বাবার চুল ধরে ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন।
সঞ্জয়ের অভিযোগ, বাবা মাকে মারধর করতেন। গায়ে আগুন দিয়েছেন তিনিই। ওই যুবকের কথায়, “মায়ের কিছু হয়ে গেলে বাবাকেও ছাড়ব না। পুলিশে দেব।”
এ দিকে, মারধর খেয়ে শচীনবাবু যাচ্ছিলেন ওয়ার্ডের দিকে। চম্পাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন তাঁকে দেখতে পেয়ে ফের একপ্রস্থ মারধর করেন। জরুরি বিভাগের সামনে দিনভর বসেছিলেন শচীন। বিকেলের পরে চম্পাদেবীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়।
পারিবারিক সূত্রের খবর, শচীনবাবু ও তাঁর স্ত্রী ঘুরে ঘুরে কাপড় বিক্রি করেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝে মাঝেই অশান্তি হয়। সঞ্জয়ের অভিযোগ, মাকে কারণে-অকারণে মারধর করেন বাবা। তিনি জানান, শনিবার রাত ৮টা নাগাদ মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। তিনি জানতে পারেন, ফের মাকে মারধর করেছেন বাবা। তারপর রাতে অগ্নিদগ্ধ হন চম্পাদেবী।
শনিবার রাতে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে হাসপাতাল চত্বরে ঠায় বসেছিলেন। স্ত্রীর গায়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “শনিবার চড়-চাপ্পড় মেরেছিলাম। কটূ কথাও বলেছি। তবে মাত্রাতিরিক্ত কিছু করিনি। স্ত্রী নিজেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগান। আমি নেভানোর চেষ্টাও করি। কিন্তু তত ক্ষণে অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে।”
হাসপাতালের সামনে বসে উদাস ভাবে বলে চললেন, মধ্যবয়সী ব্যক্তিটি, “ছেলে কিংবা অন্য কারও মারধরে কিছু টেরই পাইনি...!” |
|
|
|
|
|