অত্যধিক বৃষ্টিপাতে পাট চাষে এবং লঙ্কা চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে হলদিবাড়িতে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিবাড়িতে গত ১ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গত বছর এই সময় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৭ মিলিমিটার। জানুয়ারি মাস থেকে এই পযর্ন্ত গত বছরের তুলনায় অত্যাধিক বৃষ্টি হয়েছে। হলদিবাড়ি ব্লকের কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী বলেন, “অল্প সময়ের অত্যাধিক বৃষ্টিতে পাট চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আরও কয়েকদিন এই রকম আবহাওয়া চলতে থাকলে লঙ্কা গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।” কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিবাড়িতে এ বছর ২ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে ৯০ শতাংশ জমিতে পাটের ক্ষতি হয়েছে। নিচু জমিতে জল জমেছে। উঁচু জমিতে আগাছা জন্মেছে। বৃষ্টি না কমলে আগাছা নির্মূল করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি, ১৯০০ হেক্টর জমিতে লঙ্কা চাষ হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে লঙ্কা গাছের গোড়ায় জল জমে গেলে গাছ মরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বৈকুন্ঠনাথ রায় বলেন, “যা বৃষ্টি হচ্ছে তাতে লঙ্কার মরসুম এ মাসেই শেষ হয়ে যাবে। পাটচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে কৃষকেরা বিপদে পড়বেন।” পশ্চিম হেমকুমারির গোরাচাঁদ রায় হুদুম ডাঙার সাবেদ আলি বলেন, “মরা গাছ ফেলে লঙ্কা-খেত বাঁচানোর চেষ্টা করছি। পাটে কিছু করা যাচ্ছে না।”
|
এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতে ফের দফায় দফায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির জেরে আতঙ্কে রাত কাটছে চোপড়ার বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার রাতে চোপড়ার দাসপাড়া, ঘিন্নিগাও, মাজিয়ালি, পাগলিগছ, দৌলতগছ, বক্সাবাড়ি-সহ একাধিক এলাকায় ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি হয়। বহু বাড়িঘর ভেঙে যায়। পাট এবং তিলের খেতেরও ক্ষতি হয়েছে। এক সপ্তাহ আগেও ওই এলাকাগুলি ঝড়, শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। চা বাগান এবং আনারস বাগানের ক্ষতি হয়। দুই জনের মৃত্যুও হয়। গৃহহীন হয়ে পড়েন শতাধিক মানুষ। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জেলার এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হবে জানিয়েছেন। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ঝড় ও বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার রাতে বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতে ঝড়ের সময় এলাকার বহু বাসিন্দা এলাকার স্কুলঘরগুলিতে আশ্রয় নেয়। কয়েকজন আহতও হন। চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপাল সিংহ বলেন, “সন্ধ্যা থেকে ৫ বার ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। একজন অসুস্থও হয়ে পড়েন।” চোপড়ার বিডিও অতনু মন্ডল বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতের ঝড়ে, শিলাবৃষ্টিতে চোপড়ায় পাট ও তিলের খেতের ক্ষতি হয়েছে। কিছু বাড়িঘর ভেঙেছে। ঠিক কী পরিমাণে ক্ষতি হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।”
|
ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ রেঞ্জ অফিসে আনার কাজ কেন তাঁদের দেওয়া হয়নি এই অভিযোগ তুলে দিনভর উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ার রেঞ্জ অফিসার মঞ্জুলা তিরকেকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন একদল তৃণমূল সমর্থক। শুক্রবার ওই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ব্লকের হফতিয়াগছে ঝড়ে সমাজভিত্তিক বনসৃজন প্রকল্পের বেশ কিছু গাছ পড়ে যায়। সেগুলি যাতে চুরি না-হয় সে জন্য এদিন সকালে এক ঠিকাদারের মাধ্যমে ট্রাকে তুলে রেঞ্জ অফিসে আনার কাজ চলছিল। কেন তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না-করেই কাজে নামা হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। বন দফতরের পক্ষ থেকে সরকারি দরে কাজ দিতে রেঞ্জ অফিসার রাজি হলে তৃণমূল সমর্থকরা শান্ত হননি। তাঁদের দাবি, তাঁদের দাবিমতো মজুরিতেই কাজ করতে দিতে হবে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা আশ্বাস দেওয়া হলে রাত ৯টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা ফিরে যায়। রেঞ্জ অফিসারকে এ ভাবে দিনভর হেনস্থার ঘটনার নিন্দা করেছেন রাজ্য ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার্স ফোরাম। সংগঠনের সম্পাদক মানস আচার্য বলেন, “বনকর্মীদের আইন মেনে কাজ করতে হয়। বিক্ষোভকারীরা সে কথা না-শুনে যেভাবে মহিলা রেঞ্জ অফিসারকে হেনস্থা করা হয় তার নিন্দা করছি। প্রয়োজনে বন দফতরের পদস্থ কর্তাদের কাছে বিহিত চাইব।”
|
সাইকেল আরোহী মহিলাকে ধাক্কা মারার পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ম্যাক্সিট্যাক্সি নয়ানজুলিতে উল্টে গেলে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানার নাহিটের গোপালপুর এলাকায়। জখম হন ১০ যাত্রী। মৃতদের মধ্যে ২ জন ম্যাক্সিট্যাক্সির যাত্রী ও কন্ডাক্টর। অন্যজন সাইকেল আরোহী ওই মহিলা। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম মামুদ জুলফিকার চৌধুরী (৪৬)। তিনিই গাড়ির কন্ডাক্টর। অন্যজন গাড়ির যাত্রী বিকল ভুঁইমালি (৪২)। তাঁর বাড়ি হরিরামপুরের দানগ্রামে। সাইকেল আরোহী মহিলার নাম কণিকা সাহা (৩৯)। জখম ১০ জনের মধ্যে ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর জখম ৪ জনকে মালদহ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গাড়িটি মালদহের গাজল থেকে হরিরামপুরে যাচ্ছিল। গোপালপুরের কাছে কণিকা সাহা নামে এক আইসিডিএস কর্মী সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁকে পাশ কাটাতে গিয়ে ধাক্কা মেরে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। |