মুক্তি যাবজ্জীবন সাজার ৮ বন্দির
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি ৮ জন মুক্তি পেলেন শুক্রবার, নববর্ষের ঠিক আগের বিকেলে। দীর্ঘ দিন কারাগারে বন্দিদের মুক্তির সুযোগ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ জেলকোডে। সেই সূত্রেই বেশ কয়েক জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এ দিন দুপুরে মুক্তির নির্দেশ মেদিনীপুরে পৌঁছতেই জেলা প্রশাসনে তৎপরতা শুরু হয়। শেষ বিকেলে জেল গেট পেরিয়ে একে একে খোলা আকাশের নীচে এসে দাঁড়ান দাঁতনের মকলামপুরের বুধিয়া টুডু, বুধিয়া মুর্মু, গড়বেতার রাধানগরের ভীম পণ্ডিত, বাঁকুড়ার সিমলাপালের সরোজ মহান্তি, বাঁকুড়ারই ইঁদপুরের চাকলতাশহরের শিবদাস মণ্ডল, বাঁকুড়ারই পাত্রসায়রের তারাপদ কাপড়ি, বীরভূমের আবদানগরের নির্মল মণ্ডল এবং শ্যামাপদ মণ্ডল। ওই ৮ বন্দির কারও ২০ বছর, কারও বা ২২ বছর জেল খাটা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তাঁদের মুক্তির সময়ে জেল-গেটে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরি। জেলাশাসক বলেন, “আশা করব, এ বার ওঁরা সমাজের মূলস্রোতে ফিরবেন। সমাজের জন্য কাজ করবেন।”
নিজস্ব চিত্র।
দীর্ঘদিন পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি ৮ বন্দি। রাধানগরের ভীম পণ্ডিত বলেন, “এত দিন পর জেল থেকে বেরিয়ে ভাল লাগছে।” তাঁর কথায়, “এ বার ফের সংসারে ফিরব। ব্যবসা করে সংসার চালাব।” জেল সূত্রে খবর, ১৯৮৬ সালের একটি খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন ভীম। ইঁদপুরের শিবদাস মণ্ডল বলেন, “জীবনের সেরা সময়টাই তো জেলে কাটালাম। মুক্তি যে পাব, সে আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। ভাল লাগছে ছাড়া পেয়ে।” শুক্রবার যাঁরা মুক্তি পেলেন, তাঁদের মধ্যে নির্মল মণ্ডলের আবার নিম্ন আদালতে ফাঁসির আদেশও হয়েছিল। পরে অবশ্য হাইকোর্ট ফাঁসি বদলে যাবজ্জীবনের নির্দেশ দেয়। বীরভূমের রাজনগর থানার আবদানগরের নির্মল মণ্ডলের সঙ্গেই মিহির ঘোষ নামে এক জনও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে মেদিনীপুর জেলেই ছিলেন। মিহিরবাবুর স্ত্রীই খুন হয়েছিলেন। পরে জেলবন্দি অবস্থাতেই মিহিরবাবুর মৃত্যু হয়। সে কথা মনে পড়লে নিজের মুক্তি যেন আরওই অবিশ্বাস্য ঠেকছে নির্মলবাবুর। তাঁর বাড়িতে বৃদ্ধা মা, ভাই ছাড়াও রয়েছেন স্ত্রী জবা, ছেলে শঙ্কর। নির্মলবাবু যখন ধরা পড়েন, তখন তাঁর ছেলের বয়স ছিল মাত্রই ৭ মাস। ১৯৯২ সালে তাঁর সাজা ঘোষণা হয়। তার পর কখনও আর বাবা-ছেলের দেখা হয়নি। বাড়ি ফেরার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন নির্মলবাবু। কী ভাবে চিনবেন ছেলেকে? নির্মলবাবু বলেন, “আমার পক্ষে তো চেনা সম্ভব নয়। ছেলেকে সেই ছোটবেলায় দেখছি। তখন ওর বয়স ৭ মাস। বাড়ি ফেরার পর ওর মা-ই আমাকে দেখিয়ে বলবে,‘এটা তোর বাবা’।” ‘বাবা’ ডাকটাই যে কোনও দিন শোনেননি এই যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.