ভোজনরসিক বাঙালি পর্যটকদের জন্য সুখবর। কাশ্মীরে নিখাদ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা পেতে পারবেন হরেক কিসিমের বাঙালি রান্নার স্বাদও। সৌজন্যে অবশ্য উপেন্দ্র গুপ্ত নামে এক বাঙালি বা বলা ভাল, তাঁর তৈরি কাশ্মীরের প্রথম বাঙালি রেস্তোরাঁ-‘ক্যালকাটা হাট’। শ্রীনগরের লাল চকে খুব সম্প্রতি উপেন্দ্রবাবু চালু করেছেন রেস্তোরাঁটি। এবং চালু হওয়ার অল্প দিনের মধ্যেই তাকে নিয়ে প্রবল উৎসাহ ভূস্বর্গে।
কিন্তু বাঙালি কোথাও বেড়াতে গেলে সেখানকার খাবারই তো চেখে দেখতে ভালবাসে। তা হলে কি আদৌ বাঙালি পর্যটকদের টানতে পারবে রেস্তোরাঁটি? এই ব্যাপারে সমস্ত সন্দেহকেই একদম স্ট্রেট ব্যাটে উড়িয়ে দিলেন খোদ রেস্তোরাঁর মালিক। বললেন, “পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের পর্যটকরা ভিড় জমান এখানে। প্রতিদিন এতটাই কাজের চাপ থাকে যে আমরা বিশ্রামের সময়ই পাই না।” একেই বোধ হয় বলে অভিজ্ঞতা। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় কাজ করেছেন উপেন্দ্রবাবু। দেখেছেন, কাশ্মীরে বেড়াতে এসেও প্রচুর বাঙালি অনেক সময়ই রেস্তোরাঁয় বাঙালি পদের খোঁজ করেন। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই তাঁর এই উদ্যোগ।
কিন্তু ঠিক কী কী মিলছে ‘ক্যালকাটা হাটে’? জানা গেল, ভাত, ডাল, মাছের মত প্রতিদিনের চেনা বাঙালি খাবার থেকে শুরু করে শখের চিকেন টিক্কা-সবই পাওয়া যাচ্ছে। দামও সাধ্যের মধ্যে। অর্থাৎ বেড়াতে গিয়েও রেস্ত বাঁচিয়ে বাঙালি রেস্তোরাঁয় যেতে পারবে আম বাঙালি। শুধু বাঙালি কেন? কাশ্মীরের প্রচুর বাসিন্দাও তাঁদের পরিবার নিয়ে প্রায়ই আসছেন এখানে। ফলে প্রধানত বাঙালি পর্যটকদের জন্য শুরু হওয়া ‘ক্যালকাটা হাট’ ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে প্রাদেশিকতার সীমা।
বাঙালি রান্নার অভিনবত্ব এই রেস্তোরাঁর বিশেষত্ব। শ্রীনগর ছাড়াও উপত্যকার বিভিন্ন টুরিস্ট রিসর্ট, রিগাল চক, মৌলানা আজাদ রোড, টুরিস্ট রিসেপশন সেন্টার, টিউলিপ গার্ডেনস, মুঘল গার্ডেন এবং রাজ ভবনের মত এলাকায় ‘ক্যালকাটা হাটের’ বিশাল হোর্ডিং যে অতিথিদের চোখ টেনেছে, তা জানা গেল এক বাঙালি পর্যটকের কথা থেকেই। কলকাতার অনিতা রায় কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছেন মা-বাবার সঙ্গে। বললেন, “পহেলগামে রেস্তোরাঁর হোর্ডিং দেখে এখানে চলে এলাম খেতে।”
অল্প দিনেই চূড়ান্ত জনপ্রিয় হয়ে যাওয়া ‘ক্যালকাটা হাটের’ জন্য রয়েছে আশার খবর। কাশ্মীরের পর্যটন দফতরের ধারণা, এই বছর প্রায় ২০ লাখ পর্যটক আসতে চলেছেন কাশ্মীর উপত্যকায়। লাগাতার তিন বছর অশান্ত থাকার পর ২০১১ সালে বেশ ভালই ব্যবসা পেয়েছে কাশ্মীরের পর্যটন সংস্থাগুলি। এই বছরও যে সেই ধারা চলতে থাকবে, সে ব্যাপারে আশ্বস্ত পর্যটন দফতর। |