এই রাস্তাটির নাম জাতীয় সড়ক?
ক’দিন আগে ৬ নং জাতীয় সড়ক (চলতি নাম বোম্বে রোড) ধরে টাটানগর গিয়েছিলাম। মেদিনীপুর থেকে দূরত্ব প্রায় ১৪০ কিমি। সাধারণত ঘণ্টা তিনেকের বাস জার্নি। কিন্তু আমাদের সময় লাগল প্রায় সাড়ে সাত ঘণ্টা। পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ এবং পুরো ঝাড়খন্ড অংশের এই জাতীয় সড়কটির ভগ্নদশা দেখে অবাক হলাম। শরীরের হাড়, গাঁটের অবস্থা না-বলাই ভাল। দশ থেকে পনেরো কিমি-র উপর গাড়ির স্পিড বাড়ানো যাচ্ছে না।
ছবি: সুদর্শন নন্দী
কোথাও কোথাও পিচটুকুও নেই। কলকাতা-মুম্বই এই জাতীয় সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দূরপাল্লার বাস বন্ধ হয়ে গেছে জাতীয় সড়কটির বেহাল অবস্থার জন্য। অবিলম্বে এই ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কটির মেরামতের ব্যবস্থা করা হোক।
বালি হল্ট-এ অব্যবস্থা
পূর্ব রেলের কর্ড ও মেন লাইনের এক সংযোগকারী স্টেশন হল বালি হল্ট। এই স্টেশনটি এক্সপ্রেসওয়ের পাশে হওয়ায় এর গুরুত্ব দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। স্টেশন থেকে সিঁড়ি-পথে নামার সময় যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। সিঁড়ি-পথ যেমন সংকীর্ণ তেমনই নোংরা। সন্ধের পর আলো জ্বলে না। ফলে, ভবঘুরে থেকে শুরু করে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়।
পথ যখন ব্যবসাকেন্দ্র
যে শহরে বাস করি, তার প্রায় প্রত্যেক পথ জোড়া ইমারতি মালপত্রের মজুত ও বিক্রয়কেন্দ্র। ইট-বালি-পাথরকুচি বিছানো নেই এমন রাস্তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মিউনিসিপ্যালিটি বা পঞ্চায়েত, রাস্তার ধার-পাশ দখল করে মাল ঢেলে দিতে পারলেই হল। পাড়ায় ছোট-বড় যে মাপেরই নির্মাণ কাজ হোক, এই সব তথাকথিত ‘পাড়ার বেকার ছেলে’-র থেকেই মালপত্র নিতে হবে। বাড়তি দাম, মালের পরিমাণ ও মানে ঘাটতি সব বৈশিষ্ট্যই আছে। পাড়ার লোকজন কিল খেয়ে কিল গোপন করেন। ডাঁই করা মালপত্র ডিঙিয়ে পাশ কাটিয়ে পেরোতে গিয়ে বালিতে চাকা আটকানো, স্টোন চিপসে হড়কে যাওয়া নিত্যনৈমিত্তিক কাণ্ড।
শুধু দোকানের কথা বললেই হবে না। অনেক জায়গাতেই ঠিকাদার বা সাধারণ লোকজন বাড়ি বানানোর জন্য মাল এনে ফেলে রাখছেন রাস্তার উপর। বাড়ির নির্মাণপর্বে রাস্তার কিছুটা দখল করে ঘড়াং ঘড়াং আওয়াজ করে চলছে মশলা মেশানোর যন্ত্র। হই হই রবে রাস্তার উপর দিয়ে মাখা মশলার কড়া মাথায় নিয়ে দৌড়চ্ছেন নির্মাণকর্মীরা।
এত দিন ব্যাপারটা গলি কী পাড়ার রাস্তাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। এখন জি টি রোড-ও বাদ যাচ্ছে না। পায়ে চলার জন্য নির্ধারিত অংশে দোকানের প্রসারিত অংশ, আখ-মাড়াই কল, চাঙারি-সহ ফুচকার দোকান, খেয়ালখুশি মতো দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি ইত্যাকার শতেক গোদের উপর শেষ সংযোজন, বালি পাথরের বিষফোঁড়া। পায়ে হাঁটা পথচারীদের উঠে পড়তে হচ্ছে বড় রাস্তার উপর। প্রাণ বাঁচাতে চলতে হচ্ছে রাস্তার মাঝখান দিয়ে।
ফেরি সার্ভিসের জেটি
কোন্নগর-পানিহাটি ফেরি সার্ভিসের জেটি ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পারাপার হন। অথচ কোন্নগর-পানিহাটি দু’দিকের জেটি এবং কাঠের সাঁকোর অবস্থা খুবই খারাপ। জেটির লোহায় মরচে ধরে গর্ত হয়ে গেছে। পানিহাটি দিকের জেটির মাত্র কুড়ি শতাংশ জায়গা ব্যবহারের উপযোগী। বাকি অংশ যাত্রীদের জন্য নিষিদ্ধ করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এ দিকে যে কাঠের সাঁকো দিয়ে জেটিতে আসতে হয়, তার কাঠের পাটাতন অনেক জায়গায় পচে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় ছয় ইঞ্চি মতো ফাঁক হয়ে আছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন।
এত অবহেলা কেন?
যাদবপুর স্টেশনটির প্রতি রেল কর্তৃপক্ষের এত উদাসীনতা, এত অবহেলা কেন? ক্যানিং, নামখানা, ডায়মন্ডহারবার, বারুইপুর প্রভৃতি অঞ্চলের অসংখ্য খেটেখাওয়া মানুষকে জীবিকার সন্ধানে রোজ এখানে আসতে হয়। বহু ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার জন্য এখানে নিত্য আসা-যাওয়া। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ রকম একটি জনবহুল স্টেশনে যাত্রীদের সুবিধার্থে ট্রেন যাতায়াতের কোনও আগাম সংবাদ মাইকে ঘোষণা করা হয় না। ফলে, একে-ওকে জিজ্ঞেস করে জানতে হয়, কোন ট্রেন আসছে। কেউ বা ভুল করে অন্য ট্রেনে উঠেও পড়েন। এ রকম চরম দুর্গতি হয় বহু মানুষের।
টিকিট কাটার সময় যতই লাইন পড়ুক দুটির বেশি কাউন্টার খোলা হয় না। তার ফলে, টিকিটের বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকেই প্রয়োজনীয় ট্রেন ধরতে পারেন না। বিলম্ব হয় গন্তব্যে পৌঁছতে। ২ নং প্ল্যটফর্মে একটি টিকিট কাউন্টার থাকা সত্ত্বেও তা নিয়মিত খোলা হয় না। কখনও বা মর্জিমাফিক ঘণ্টা খানেকের জন্য খোলা হয়।
এমনিতেই এ সময় ট্রেনগুলিতে এত ভিড় থাকে যে, সাধারণ মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার করে। অনেকের প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার উপক্রম হয়। এর কি কোনও সুরাহা নেই?
স্টেশনের সাজসজ্জা
সম্পাদক সমীপেষুতে অতীশচন্দ্র ভাওয়ালের ‘পা পিছলে’ (২১-৩) শীর্ষক লেখার প্রসঙ্গে বলি, মসৃণ ফ্লোর মার্বেলের অনেক অসুবিধা সত্ত্বেও প্রায় সর্বত্র এর ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে সাজসজ্জা, বসার জায়গা, থাম, দেওয়াল আগে সিমেন্ট বা মোজাইকে বাঁধানো ছিল। এখন বদলে গ্লেজ টাইলস লাগানো হচ্ছে। এগুলি সহজে অত্যন্ত ঠান্ডা/গরম হয়। অল্প আঘাতে ভেঙে যায়। টাইলস খুলে গেছে অনেক স্টেশনেই।
হাসপাতাল চাই
হুগলি জেলার মহকুমা ও জেলা হাসপাতালগুলির অবস্থান এমনই, যার ফলে জেলার ৮০ শতাংশ মানুষের পরিষেবা পেতে অনেক অসুবিধা হয়। হুগলি নদীর তীরবর্তী চুঁচুড়া, চন্দননগর, শ্রীরামপুর ও উত্তরপাড়ায় জেলার প্রধান ৪টি হাসপাতাল ৩০ কিলোমিটার ব্যবধানের মধ্যেই অবস্থিত। চন্দননগর বা শ্রীরামপুর মহকুমা হাসপাতালের পর জেলার একেবারে পশ্চিম সীমান্তে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল আছে। যার দূরত্ব চন্দননগর থেকে প্রায় ৮০ কিমি। মাঝের একটি বিস্তীর্ণ জনবহুল এলাকা যার মধ্যে সিঙ্গুর, ধনেখালি, হরিপাল, চণ্ডীতলা, পুড়শুড়া প্রভৃতি ব্লকগুলির কয়েক লক্ষ মানুষ মহকুমা হাসপাতালের পরিষেবা পায় না দূরত্বের জন্য। সিঙ্গুর তো এখন আন্তর্জাতিক পরিচিতিসম্পন্ন ব্লক। মাননীয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী হুগলির মানচিত্র দেখে সহজেই অনুভব করতে পারবেন ওই অঞ্চলের মানুষেরা স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে কতটা অবহেলিত। অবিলম্বে সিঙ্গুর ব্লক হাসপাতালকে কমপক্ষে মহকুমা স্তরের হাসপাতালে উন্নীত করে জেলার অর্ধেক বঞ্চিত মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ দেওয়ার দাবি করছি।
লালগোলায় অত্যাচার
শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় ট্রেনযাত্রার করুণ অভিজ্ঞতা জানানোর জন্য এই চিঠি। এই শাখায় সাম্প্রতিক কালে ট্রেনের সংখ্যা কিছু বেড়েছে বটে, কিন্তু পরিষেবা অত্যন্ত নিম্নমানের। ট্রেনের ফ্যানের ফাঁকে ফাঁকে জমে আছে বিড়ি-সিগারেটের টুকরো, পানমশলা, খৈনির প্যাকেট, খাবারের উচ্ছিষ্ট এবং ঠোঙা। অনেক বাথরুমের দরজা ভাঙা। চলছে অনর্গল ধূমপান। কোনও আর পি এফ কিংবা চেকারের দেখা নেই। ভাগীরথী, হাজারদুয়ারী বা ধনধান্যের মতো এক্সপ্রেসে সংরক্ষিত কামরায় তাদের দেখা মিললেও অন্য কোথাও দেখা মেলে না। ফলে, যাত্রীরা অ-সুরক্ষিত বোধ করছেন। হকারদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, নিত্যযাত্রীদের তাণ্ডব তো ছিলই, তার উপর সাম্প্রতিক কালে শুরু হয়েছে বৃহন্নলাদের সংগঠিত অত্যাচার। অথচ আর পি এফ বা কোনও নিরাপত্তারক্ষীর দেখা নেই।
সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন স্টেশনে ঘটে-চলা ছিনতাই, ধর্ষণ বা ডাকাতির ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীরা আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। লালগোলা প্যাসেঞ্জারের দীর্ঘ সাত-আট ঘণ্টার যাত্রাপথে যে-সব যাত্রী বৈধ টিকিট কেটে যাত্রা করছেন, তাঁরা কি একটু স্বাচ্ছন্দ্য পেতে পারেন না?


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.