চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে
বিক্রয়করের ক্ষতিপূরণ বন্ধ, প্রতিবাদ মমতার
কেন্দ্রীয় বিক্রয়করের হার কমানোর ফলে রাজ্যগুলির প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ একতরফা ভাবে বন্ধ করে দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে পাঠানো এক চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। একই ভাবে, পরিষেবা করের আওতার বাইরে যে সব ক্ষেত্র থাকবে তা-ও কেন্দ্র একতরফা ভাবে তৈরি করেছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির সুপারিশ কেন্দ্র উপেক্ষা করেছে বলে দাবি তাঁর। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবিলম্বে এই দুই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন মমতা।
২০০৮ সালের ১ জুন থেকে কেন্দ্রীয় বিক্রয়করের পরিমাণ ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করে কেন্দ্র। যে হেতু এই কর বাবদ পাওয়া টাকা রাজ্যগুলির উন্নয়নের কাজে ব্যবহৃত হয়, সে হেতু তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে বলেছেন, ২০০৭-২০০৮ অর্থবর্ষ থেকে ২০০৯-২০১০ অর্থবর্ষ পর্যন্ত প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলেও ২০১০-২০১১ অর্থবর্ষে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ একতরফা ভাবে কমিয়ে দেয় কেন্দ্র। কারণ হিসেবে বলা হয়, যুক্তমূল্য করের (ভ্যাট) হার ৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য। মমতার বক্তব্য, যুক্তমূল্য করের হার ধার্য করা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে। সুতরাং এ ব্যাপারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ মানা যায় না।
কিন্তু ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কমিয়েই থেমে থাকেনি কেন্দ্র। সম্প্রতি রাজ্য সরকারগুলিকে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ২০১১-২০১২ অর্থবর্ষের জন্য কোনও ক্ষতিপূরণই দেওয়া হবে না। এই জোড়া ধাক্কার ফলে রাজ্যের ১৮০০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে বলে অর্থ দফতরের হিসেব।
মমতা প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, “আমরা মনে করি কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত কোনও অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর ফলে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।” কেন্দ্র যে ভাবে পরিষেবা করের বাইরে থাকা ক্ষেত্রগুলির তালিকা (নেগেটিভ লিস্ট) তৈরি করেছে, তা নিয়েও আপত্তি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি একটি তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়েছিল। কিন্তু তা উপেক্ষা করে কেন্দ্র নিজের মতো তালিকা তৈরি করছে। এটাও সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় ধারণার উপরে আঘাত। উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করা এবং এনসিটিসি গঠন করা নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় মতাদর্শ মেনে না চলার অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা। তাঁর সেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন আঞ্চলিক দলগুলি, এমনকী বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রীরাও। রাজ্যগুলির দাবিদাওয়াকে সামনে রেখে মমতা, নীতীশ কুমার, নবীন পট্টনায়কদের একটা অঘোষিত জোটও গড়ে উঠেছে। এবং তাঁদের চাপের মুখে ওই দুই বিষয়েই পিছু হটতে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। এ বার অর্থনীতির প্রশ্নে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা। যে বিষয়টি অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও মাথাব্যথা বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি। এনসিটিসি জট কাটাতে আগামী ১৭ তারিখ রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার আগে মমতার এই চিঠি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.