|
|
|
|
সুনামি |
সুনামি কী? |
সমুদ্রের তলদেশে কোনও অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জেরে যখন ঢেউ অতি শক্তিশালী হয়ে দ্রুত বেগে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসে এবং ৩-৬ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে তীরে আছড়ে পড়ে, সেই পরিস্থিতিকে সুনামি বলে। সমুদ্রের তলদেশে অতি তীব্র ভূমিকম্প, ভূমিস্খলন থেকে সুনামির সৃষ্টি হতে পারে।
|
সুনামির সাবধানবাণী কী? |
প্রশান্ত মহাসাগর বা ভারত মহাসাগর অঞ্চলের (লাইন অফ ফায়ার) সুনামিপ্রবণ অঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭.৫ মাত্রা বা তার বেশি তীব্রতার ভূমিকম্প হলে সুনামি-সতর্কতা কেন্দ্রগুলি উৎসস্থলের আশপাশের এলাকার প্রশাসনকে তা জানায়। যে সব এলাকার জন্য সুনামি সাবধানবাণী জারি হয়, সেখানে প্রশাসনের তরফে সমুদ্রের ধারে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়। যেমন, বুধবার সাবধান করা হয় আন্দামান, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলবর্তী এলাকার প্রশাসনকে।
|
|
সুনামি সতর্কতা কী? |
ঢেউয়ের পরিবর্তন দেখে সুনামি-সতর্কতা কেন্দ্র বুঝতে পারে, তা কত দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং কোন কোন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে পারে। ওই সব এলাকার জন্য সতর্কতা জারি করে সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র। সমুদ্রের তীর থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়। বুধবার নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের জন্য চূড়ান্ত সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
|
সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র কী? |
যে সব এলাকায় সমুদ্রের নীচে ভূ-স্তরের বিভিন্ন প্লেটের মধ্যে ক্রমাগত ঘর্ষণ হচ্ছে, সেখানে বড় ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা সব সময়েই থাকে। ওই সব সুনামিপ্রবণ এলাকায় ভূমিকম্পের জেরে সমুদ্রের ঢেউয়ের কোনও পরিবর্তন লক্ষ করার জন্য তৈরি হয়েছে গবেষণাকেন্দ্র। সেগুলিকে বলে সুনামি-সতর্কতা কেন্দ্র। প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দেশে সুনামি-সতর্কতা কেন্দ্র রয়েছে। রয়েছে ভারতেও।
|
এলাকা খালি করতে হয় কতক্ষণে? |
সতর্কতা জারির সঙ্গে সঙ্গেই। কারণ, সুনামির প্রচণ্ড শক্তিধর ঢেউ ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটার বেগে স্থান পরিবর্তন করে।
|
২০০৪-এ সতর্কবার্তা পাওয়া যায়নি কেন? |
সেই সময় ভারত, ইন্দোনেশিয়া বা ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সুনামি সতর্কতা কেন্দ্র ছিল না। ২০০৪ সালের পরে হায়দরাবাদে সুনামি-সতর্কতা কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। বুধবার সেখান থেকেই নিকোবরের জন্য সুনামি-সতর্কতা জারি হয়। |
|
|
|
সুনামির ছয়কাহন |
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪; ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচে। ৯.১ মাত্রার ভূকম্পনে একাধিক বার আছড়ে পড়ে সুনামি। আছড়ে পড়ে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু ঢেউ। মৃত প্রায় ২ লক্ষ ২৬ হাজার। |
২৭ অগস্ট, ১৮৮৩; ক্রাকাতোয়া, ইন্দোনেশিয়া। ভূকম্পন মাত্রা ছিল ৭.৪। প্রায় ১৪০ ফুট সুনামি আছড়ে পড়ে সুমাত্রা ও জাভা উপকূলে। ১৬৫টি গ্রাম সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। মৃত ৩৬ হাজার। |
১ নভেম্বর, ১৭৫৫ লিসবন, পর্তুগাল। ১০ মিনিটে পরপর তিনটি ভূমিকম্পের (মাত্রা ৮.৫-৯) ফলে সৃষ্টি হয় সুনামি। উপকূলে আছড়ে পড়ে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু ঢেউ। মৃত লক্ষাধিক। |
২৮ ডিসেম্বর, ১৯০৮; মেসিনা, ইতালি। ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭.২। সুনামির ফলে সৃষ্টি হয় প্রায় ৪০ ফুট উঁচু ঢেউ। মৃত প্রায় ১ লক্ষ ২৩ হাজার। |
২৮ অক্টোবর, ১৭০৭; কোচে অঞ্চল, জাপান। ভূকম্পন মাত্রা ছিল ৮.৪। সুনামির ফলে সৃষ্টি হয় প্রায় ৮৪ ফুট উঁচু ঢেউ । মৃত ৩০ হাজার। |
১১ মার্চ, ২০১১; জাপান। ভূকম্পন মাত্রা ছিল ৯। ৩০ ফুট উঁচু সুনামির ঢেউয়ের ধাক্কায় মৃত প্রায় ১৫ হাজার। |
|
|
|
ত্রস্ত সুমাত্রা
|
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪: কম্পনের মাত্রা ৯.১। সুমাত্রার আচেতে। মৃত ১ লক্ষ ৭০ হাজারেরও বেশি। |
২৮ মার্চ,২০০৫: কম্পনের মাত্রা ৮.৬। সুমাত্রায়। মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৩০০। |
১৭ জুলাই, ২০০৬: জাভা। কম্পনের মাত্রা ৭.৭। মৃত প্রায় ৫৫০। |
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৯: কম্পনের মাত্রা ৭.৬। মৃত ১১০০। সুমাত্রার পদং শহরে। |
২৫ অক্টোবর, ২০১০: কম্পনের মাত্রা ৭.৫। মৃত ৪৪৫। সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলে। |
১১ এপ্রিল, ২০১২: কম্পনের মাত্রা ৮.৭। মৃত বা নিখোঁজ জানা নেই। |
|
|
|
শক্তিশালী দশ
(১৯০০-২০১২) |
২২ মে, ১৯৬০ চিলি; কম্পনের মাত্রা ৯.৫*। মৃত ৫০০০। |
২৮ মার্চ, ১৯৬৪ আলাস্কা; কম্পনের মাত্রা ৯.২*। মৃত ১২৫। |
২৬ ডিসেম্বর, ২০০৪ বান্দা আচে, ইন্দোনেশিয়া; কম্পনের মাত্রা ৯.১*। শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভারত-সহ ন’টি দেশে মৃত ২ লক্ষ ২৬ হাজার। |
১১ মার্চ, ২০১১ জাপান; কম্পনের মাত্রা ৯*। মৃত ১৫ হাজারের বেশি। |
৪ নভেম্বর, ১৯৫২ রাশিয়া; কম্পনের মাত্রা ৯*। |
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ চিলি; কম্পনের মাত্রা ৮.৮*। মৃত ৫০০। |
৩১ জানুয়ারি, ১৯০৬ ইকুয়েডর ও কলম্বিয়া; কম্পনের মাত্রা ৮.৮*। মৃত ১ হাজারের বেশি। |
১১ এপ্রিল, ২০১২ ইন্দোনেশিয়ার কাছে সমুদ্রতলে; কম্পনের মাত্রা ৮.৭*। |
৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৬ আলাস্কা; কম্পনের মাত্রা ৮.৭*। |
২৮ মার্চ, ২০০৫ সুমাত্রা; কম্পনের মাত্রা ৮.৬*। মৃত ১৩০০। |
* রিখটার স্কেলে, তথ্য: রয়টার্স |
|
|
|
|
|
|
|