অপুষ্ট শিশুদের জন্য নয়া কর্মসূচি গোঘাটের গ্রামে |
অপুষ্ট শিশুদের চিহ্নিত করে তাদের ‘সুস্থ ও স্বাভাবিক’ করে তোলার প্রয়াসে সামিল হল গোঘাট ২ ব্লক প্রশাসন। বিডিও অনির্বাণ সোম, শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক সুহাস সরকার এবং বিএমওএইচ দুর্গাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ব্লক তদারকি কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেন। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থেকে ৬ বছর পর্যন্ত সমস্ত শিশু এবং গর্ভবতীদের জন্য খাবার দেওয়া হয়। তাহলে এই কর্মসূচিতে নতুন কী কাজ হবে?
গোঘাট ২ বিডিও অনির্বাণ সোম বলেন, “অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি থেকে খাবার দেওয়ার পরেও দেখা গিয়েছে, কিছু শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। সেই সমস্ত কম ওজনের বাচ্চাদের দেখভালের ক্ষেত্রে কোনও সরকারি প্রকল্প নেই। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ওই সব কম ওজনের শিশুদের বিশেষ যত্ন নিতেই এই পরিকল্পনা।” তিনি জানান, ব্লকের প্রতিটি পঞ্চায়েতের গ্রাম ধরে ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে বয়সের তুলনায় কম ওজনের শিশুদের খোঁজ করা হচ্ছে। পরে সেই সমস্ত শিশুদের ছবি-সহ ফাইল তৈরি হচ্ছে। সেখানে লিপিবদ্ধ থাকছে শিশুদের অপুষ্টির কারণ, অসুখ-বিসুখ, পরিবারের খাদ্যাভাস এবং অন্য সমস্ত খুটিনাটি বিষয়। দিন দশেক ধরে এই সমীক্ষার কাজ চলছে।
শিশুবিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) সুহাস সরকার বলেন, “ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে দু’টি পঞ্চায়েত, কুমারগঞ্জ এবং হাজিপুরে এই সমীক্ষা শেষ হয়েছে। ব্লকের অন্য পঞ্চায়েতে কাজ চলছে। ব্লকের ১৭১টি গ্রামের প্রায় ১৪ হাজার শিশুর মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৭০টি শিশুকে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।” বিএমওএইচ জানান, প্রত্যেক সপ্তাহে স্বাস্থ্য শিবির করে শিশুদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। শিবিরগুলিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের জন্য মহকুমাশাসককে বলা হয়েছে। এই কর্মসূচিকে একটি নতুন প্রকল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিতে মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী জেলাশাসকের কাছে দরবার করেছেন। এ ব্যাপারে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন।
এ দিকে, চিহ্নিত হওয়া শিশুদের খাবারের তালিকা ঠিক করে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য দরকার পুষ্টি বিশেষজ্ঞের। অথচ আরামবাগ হাসপাতালে কোনও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নেই। মহকুমাশাসক বলেন, “গোঘাট ২ ব্লকের ওই কর্মসূচির খুটিনাটি জেলা প্রশাসনকে জানানো হচ্ছে। শীঘ্রই হাসপাতালে পুষ্টি বিশেষজ্ঞ পাঠানো হবে বলে জেলাশাসক আশ্বাস দিয়েছেন।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে গ্রামে শিশু ও গর্ভবতীদের পুষ্টির জন্য একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। তারপরেও গোঘাট ২ ব্লকের ওই উদ্যোগের সাফল্য দেখতে উদগ্রীব জেলা প্রশাসন। এটিকে ‘মডেল প্রকল্প’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পরে সব ক’টি ব্লকেই এই কর্মসূচি চালু হবে। এর জন্য তহবিলের ব্যবস্থাও হচ্ছে। জেলাশাসক বলেন, “ওই শিশুরা যাতে প্রয়োজনীয় খাবার এবং যত্ন পায় সেটা দেখা হবে।” |