নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বারো ঘন্টার ব্যবধানে প্রায় একই জায়গা থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে দার্জিলিং সদর থানার বোটানিক্যাল গার্ডেন সংলগ্ন একটা ঝোরায়। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম রূপা তামাং (৩৯) এবং কিসান ছেত্রী (৪৫)। রূপা দেবীর বাড়ি সদর থানার কাকঝোরায়। কিসানবাবুর বাড়ি সিঙিমারিতে। চারদিন ধরে দু’জনেই নিখোঁজ ছিলেন। মৃতদেহ দুটির শরীরে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তাঁদের খুন করা হয়েছে না কি আত্মহত্যার ঘটনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার বলেন, “এখনই ওই দুটি মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। দেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বোটানিক্যাল গার্ডেন ও লোথগনরের মাঝে একটি ঝোরায় রূপা দেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাসিন্দারা। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর মৃতার স্বামী গাড়ির চালক রাম তামাং পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, সিঙিঝোরার বাসিন্দা কিসানবাবুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রী’র অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই জন্য ৬ এপ্রিল স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার পরও তিনি পুলিশে অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ পেয়ে একটি হোটেলের নিরাপত্তা রক্ষী কিসানের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তাঁর বাড়িতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই একই দিন থেকে কিসানবাবু নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকেও পুলিশকে নিখোঁজের অভিযোগ জানানো হয়নি। তদন্তের কাজে সন্ধ্যায় ফের ওই ঝোরায় যায় তদন্তকারী পুলিশের একটি দল। সেই সময় ঝোরার উপরের দিকের অংশে কিসানবাবুর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এর পরই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। তা দুই পরিবারের সদস্যরাই জানেন। ফলে তারা নিখোঁজ হওয়ার পরও দু’জনের পরিবার থেকে থানায় যোগাযোগ করা হয়নি। তাঁরা একই সঙ্গে রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। সেই সময় থেকে দু’জনের মোবাইল ‘সুইচ অফ’ অবস্থায় ছিল। পুলিশের ধারণা, অন্তত তিন দিন আগে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। দুটি দেহেই পচন ধরে গিয়েছে। এদিন দুটি দেহের পাশ থেকে ‘সুইচ অফ’ অবস্থায় তাঁদের মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ। মোবাইলের ‘কল রেকর্ড’ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে তদন্তকারী পুলিশের দল। দার্জিলিং থানার এক পুলিশ অফিসার বলেন, “দুটি দেহের দূরত্ব বেশ কিছুটা ছিল। সেক্ষেত্রে তাঁদের খুন করা হয়েছে না তাঁরা আত্মহত্যা করেছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। দুটি মোবাইল সুইচ অফ করা কেন ছিল তাও দেখা হচ্ছে।” |