নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ব্যাগের চেন গলায় পেঁচিয়ে যুবককে খুন করে নদীর চরে ফেলে রেখে গেল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সকালে ভক্তিনগর থানার প্রকাশনগর লাগোয়া মহানন্দা নদী সেতু লাগোয়া চর থেকে ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কৃষ্ণ রাই (৩৫)। তাঁর বাড়ি প্রকাশনগরে। তিনি বিধান মার্কেটে একটি স্যুটকেসের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। মৃতের সঙ্গে থাকা সাইকেল এবং মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কারা, কী কারণে ওই যুবককে খুন করেছে তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পুলিশ। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলেন, “ওই ঘটনায় একটি খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। কী কারণে তাঁকে খুন করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে। আশা করছি দ্রুত ঘটনা স্পষ্ট হবে।” ভক্তিনগর এলাকায় পর পর কয়েকটি অপরাধের তদন্তে নেমে পুলিশ দুষ্কৃতীদের ধরার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এক জনকেও ধরতে পারেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। সিপিএমের ডাবগ্রাম জোনাল কমিটির সম্পাদক দিলীপ সিংহ বলেন, “কয়েকদিন আগে পেট্রোল পাম্পে খুন ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এদিন ফের খুন হল। পুলিশ শুধু আশ্বাস দিচ্ছে। আমরা পুলিশের কাছে দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরার দাবি জানিয়েছি।” পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রতিদিনের মতো সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিধান মার্কেটে দোকানে কাজে যোগ দেয় কৃষ্ণ। দোকান মালিক সতীশ সিঙ্ঘল জানান, দোকানে কৃষ্ণ ছাড়াও আপ্পু চৌধুরী এবং পলাশ সরকার নামে আরও ২ জন কর্মচারী রয়েছে। রাত ৮টা নাগাদ দোকান বন্ধের পরে ৩ জন সাইকেল নিয়ে বাড়ি রওনা হন। প্রকাশনগরের বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, রাতে এলাকার এক জায়গায় আড্ডার পর রাত ১০ টা নাগাদ কৃষ্ণ বাড়ির দিকে যান। তার পর থেকে হদিস ছিল না। সকালে বাসিন্দারা নদীর চড়ে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে সেখানে যান। তার গলায় ব্যাগের চেন জড়ানো ছিল। মুখ ভর্তি ছিল বালিতে। নিহতের বাবা দেওনাথবাবু গিয়ে দেহ চিহ্নিত করেন। দুষ্কৃতীরা কোথা থেকে চেন সংগ্রহ করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বছর ১২ আগে নেপাল সীমান্ত এলাকায় ফলের ব্যবসা করতেন কৃষ্ণ। ওই ব্যবসায় এখনও যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে কৃষ্ণর। যে ভাবে কৃষ্ণকে খুন করা হয়েছে তাতে কমপক্ষে ২ জন ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। এলাকার বাসিন্দা ভূষণ প্রসাদ জানান, কৃষ্ণর স্ত্রী, তিন ছেলে এবং মা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বিহারে বাস করছেন। মাঝে মধ্যে তারা প্রকাশনগরে আসেন। এখানে বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে থাকতেন কৃষ্ণ। তিনি বলেন, “কৃষ্ণ ভাল ছেলে বলেই জানি। কারা তাঁকে খুন করল বুঝতে পারছি না। দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছি।” |