তরল জ্বালানি গ্যাস বা এলপিজি-তে অটো চালাতে হবে। অথচ পর্যাপ্ত এলপিজি অমিল। সেই জন্য অটোচালকেরা মাঝেমধ্যেই বিক্ষোভ-অবরোধ করেছেন। তাঁদের সমস্যা মেটাতে কলকাতা ও বৃহত্তর কলকাতায় নতুন কিছু পাম্প চালু করা হবে। কোথায় কোথায় চাহিদার তুলনায় পাম্প কম, কোথায় মিলতে পারে জমি এ-সব খতিয়ে দেখতে তৈরি করা হবে উপদেষ্টা গোষ্ঠী।
এলপিজি সরবরাহ বাড়ানোর ব্যাপারে রাজ্যের পরিবহণ দফতর এবং ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন বা আইওসি-কর্তারা শীঘ্রই সমীক্ষা শুরু করবেন। মঙ্গলবার মহাকরণে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে আইওসি-র পদস্থ অফিসারদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এলপিজি-র অভাবে নাকাল অটোচালকদের বিক্ষোভ-অবরোধকে ঘিরে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলার সমস্যা
দেখা দিয়েছিল। এ-সবের জেরেই মন্ত্রী এ দিন আইওসি-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। আলোচনার পরে মদনবাবু বলেন, “এলপিজি না-পেয়ে অনেক ক্ষেত্রে চালকেরা রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক।” দিন সাতেকের মধ্যে নতুন এলপিজি পাম্পগুলির জায়গা বাছাই করার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কলকাতা ও বৃহত্তর কলকাতায় এখন অটো-এলপিজি পাওয়া যায় কমবেশি ৪০টি পাম্পে। তার মধ্যে আইওসি-র পাম্প ১৭টি। এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা জানান ওই সংস্থার এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর ইন্দ্রজিৎ বসু। তিনি বলেন, “মাসে মোট এলপিজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টনের মতো। কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদার মধ্যে সামঞ্জস্য নেই। যে-সব জায়গায় চাহিদা বেশি, সেখানে বিজ্ঞাপন দিয়েও জমি মিলছে না।” এই অবস্থায় ঠিক হয়েছে, সিএসটিসি অথবা সিটিসি-র ডিপো বা সরকারের কোনও জমি থাকলে সেখানে পাম্প চালু করার ব্যবস্থা হবে। আইওসি সূত্রের খবর, এখন পাম্প থেকে বিক্রি হওয়া এলপিজি-র ৯০ শতাংশই কেনে অটোগুলি।
তা হলে তাদের জন্য পর্যাপ্ত এলপিজি-র ব্যবস্থা হচ্ছে না কেন?
আইওসি সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রোল ও ডিজেলের মতো জ্বালানির চেয়েও এলপিজি পাম্পের জন্য সুরক্ষার অনেক বেশি আঁটোসাঁটো ব্যবস্থা করতে হয়। তাই ঘন বসতিপূর্ণ এলাকায় এলপিজি ভাণ্ডার গড়ে তোলার জন্য নিরাপত্তার সরকারি শংসাপত্র পাওয়া মুশকিল। এ দিনের বৈঠকে এই প্রসঙ্গও উঠেছিল। একটি পাম্প তৈরি করতে রাস্তার উপর কমপক্ষে ৬০ মিটার দীর্ঘ এবং ৫০ মিটার চওড়া জায়গা দরকার। এ কথা জানিয়ে আইওসি-র এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর বলেন, “গ্যাসের জন্য ডিলার কিলোলিটার-পিছু ৬৫ পয়সা পান। আমরা পাই এক টাকারও কম। পাম্প তৈরির খরচও প্রচুর। বাণিজ্যিক সংস্থার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জমি কেনার আর্থিক সঙ্গতি নেই তেল সংস্থার।”
মন্ত্রীর সঙ্গে এ দিনের বৈঠকে ছিলেন পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি তুষার সেনও। তিনি জানান, তাঁদের সংগঠন একটি নতুন এলপিজি পাম্পের দায়িত্ব নিতে চায়। পরিবহণমন্ত্রী এবং আইওসি-কর্তারা বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। |