তৃণমূলের সমালোচনায় এ বার আদিত্য কিস্কুরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
পঞ্চায়েত-ভোটের আগে ফের সক্রিয় হচ্ছে জঙ্গলমহলের আঞ্চলিক দলগুলি। কয়েক দিন আগেই শাসক তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে এলাকায় ‘তোলাবাজি’ ও ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগ তুলে বিনপুরে মিছিল করেছিল ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)। এ বার আদিত্য কিস্কুর নেতৃত্বাধীন ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টিও বাঁকুড়ায় অনুষ্ঠিত দলীয় এক সম্মেলনে রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হল। চলতি মাসের শেষেই ঝাড়গ্রামে প্রতিবাদ-সমাবেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন আদিত্যবাবুরা।
গত রবিবার বাঁকুড়ার ঝিলিমিলিতে ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির দ্বি-বার্ষিক ‘মহা সম্মেলন’-এ হাজির ছিলেন জঙ্গলমহলের তিন জেলা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মোট ৪৯৮ জন দলীয় প্রতিনিধি। ১৫ জনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন যথাক্রমে আদিত্য কিস্কু ও অসিত খাটুয়া। দলীয় সূত্রের খবর, সম্মেলনে চাঁছাছোলা ভাষায় রাজ্য সরকারের সমালোচনা করা হয়। সম্মেলনে পশ্চিম মেদিনীপুরের এক প্রতিনিধি অভিযোগ করেন, গত তিন বছর ধরে জঙ্গলমহলে খুন-সন্ত্রাসের আন্দোলনে যাঁদের সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছিল, সেই সব ‘পরিচিত মুখগুলি’ জামিন পাওয়ার পর শাসকদলের ঝান্ডা নিয়ে মিছিলে হাঁটছেন। সিপিএমের কায়দায় এলাকায় ‘তোলাবাজি’ ও ‘সন্ত্রাস’ চালাচ্ছেন। বাঁকুড়ার এক প্রতিনিধির অভিযোগ, অসংখ্য অপরাধমূলক ঘটনায় অভিযুক্ত জঙ্গি-স্কোয়াডের লোকজনকে মহাকরণে নিয়ে গিয়ে ‘আত্মসমর্পণ’ করানো হচ্ছে। মোটা অঙ্কের আর্থিক প্যাকেজ দিয়ে স্কোয়াড-সদস্যদের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে।
তাঁর মতে, জঙ্গলমহলের অত্যাচারিত মানুষের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পৃথক ঝাড়গ্রাম জেলা গঠনের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতার পাশাপাশি তিন জেলার সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে জঙ্গলমহলের স্বশাসনের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার জন্য সম্মেলনে দাবি ওঠে।
ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির সাধারণ সম্পাদক অসিত খাটুয়া বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ এখন যেন ‘হীরক রাজার দেশ’। আদিবাসী-অনগ্রসর সম্প্রদায় অধ্যুষিত পিছিয়ে পড়া এলাকায় উন্নয়ন নেই। কেবল উৎসব-অনুষ্ঠান দিয়ে মানুষকে ভুলিয়ে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। এ সবের প্রতিবাদে এবং জঙ্গলমহলের মানুষের উন্নয়নের দাবিতে ৩০ এপ্রিল ঝাড়গ্রামে দলের প্রকাশ্য সমাবেশ হবে।” ওই দিন জঙ্গলমহলের তিন জেলার স্বশাসনের দাবিতেও তাঁরা সরব হবেন বলে জানিয়েছেন অসিতবাবু। |