তোলাবাজদের দাপট ছিলই। তার উপর নিত্য দুষ্কৃতীদের নানা দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলেন বাসিন্দারা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ক্ষোভও জমছিল। গত শনিবারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটল দেগঙ্গায়। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে পুলিরে উপরে চড়াও হল জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় র্যাফ নামানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। ওই দিন রাত ৯টা নাগাদ স্থানীয় গোসাইপুর গ্রামের বাসিন্দা হাবিব রেজা চৌধুরীর গাড়ি দাঁড়িয়েছিল হামাদামা বাজারে। অভিযোগ সেই সময় স্থানীয় কুমরুলি গ্রামের বাসিন্দা বাকবুল ইসলাম, মিজানুর রহমান ওরফে পিণ্টু এবং সফিকুল ইসলাম ওরফে লাকি গাড়িটিতে ভাঙচুর চালায়। গাড়ির চালককেও মারধর করে বলে অভিযোগ। ওই বাজারেই সাইকেল সারাইয়ের দোকান রয়েছে সওকত আলির। বাধা দিতে গেলে আর জি পার্টির সদস্য প্রতিবন্ধী ওই যুবককেও মারধর করে দুষ্কৃতীরা। জখম অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। এই ঘটনার পরেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ওই তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার তো দূরের কথা, উল্টে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোয় দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। এমনকী পুলিশ ওই দুষ্কৃতীদের আড়াল করছে বলেও অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। আজিজনগর এলাকার শেখপাড়ার বাসিন্দা সওকত আলি বলেন, “দুষ্কৃতীরা প্রায়ই বাজারে এসে হামলা চালায়। ওই রাতে গাড়ি ভাঙচুরের সময় ওরা আমার দোকানে ঢুকে সাইকেল মেরামতির যন্ত্রাংশ নিয়ে যাচ্ছিল। বাধা দিলে আমাকে লাঠি দিয়ে প্রচণ্ড পেটায়। বুকে ও মাথায় আঘাত লেগেছে।’’ |
দুষ্কৃতীদের ক্রমভর্ধমান দৌরাত্ম্য ও শনিবারের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে দেগঙ্গার হামাদামা বাজারে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় মানুষ। বিক্ষোভের জেরে বেড়াচাঁপা ও হাড়োয়ার মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে বিক্ষোভ চলার পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই অবস্থান করছিলেন। কিন্তু পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে উত্তেজিত হয়ে পড়ে জনতা। ওই সময় একদল লোক পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করে। যদিও পুলিশ লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরিস্তিতি সামাল দিতে পরে বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান দেগঙ্গা থানার ওসি শান্তিনাথ পাঁজা। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন।
হামাদামা বাজার কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, “তিন দুষ্কৃতীর অত্যাচারে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং ব্যবসায়ী মহল অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। পুলিশকে একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। বাদ্য হয়েই এ দিন তাই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন স্থানীয় মানুষ।” তিনিও আরও জানান, অবিলম্বে ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। |