রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার মিলছে দেরিতে, ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের আকাল চলছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। মাস দু’য়েক ধরেই ইন্ডিয়ান অয়েলের ইন্ডেন গ্যাসের ক্ষেত্রে এই সমস্যা চলছে। নতুন সিলিন্ডার পাওয়ার ২১ দিন পরে বুকিং করতে হয়। তারপরে কমপক্ষে আরও ৩০ দিন পরে গ্যাস সিলিন্ডারের দেখা মিলছে। দু’টি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের আর্থিক সামর্থ্য যাঁদের নেই, তাঁরা এর ফলে সমস্যায় পড়ছেন। গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবিতে ইন্ডেন গ্যাস সরবরাহকারী বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটার সংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগও জমা পড়েছে। মুর্শিদাবাদ হোলসেল কনসিউমার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি-র সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, “ইন্ডিয়ান ওয়েলের দুর্গাপুর প্ল্যান্ট থেকে আমাদের সিলিন্ডার সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় যোগান কম থাকায় ওই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আশাকরি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ওই সমস্যা মিটে যাবে।” ইন্ডিয়ান অয়েলের দুর্গাপুর এরিয়া ম্যানেজার (এলপিজি সেলস্) মহেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “আগামী সাত-দশ দিনের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়মিত হয়ে যাবে।”
প্রাণীসম্পদ দফতরের জেলা পলি ক্লিনিকের চিকিৎসক অভিজিৎ দত্ত বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে রান্নার গ্যাস নিয়ে সমস্যায় ভুগছি। একটা সিলিন্ডার শেষ হয়ে যাওয়ার পরে নতুন সিলিন্ডার পাওয়ার মাঝের সময়টুকু আতঙ্কের মধ্যে কাটে। গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ার ভয়ে রাতের রান্না বন্ধ করে হোটেল থেকে এনে খাচ্ছি।” ইন্ডেন ছাড়াও বহরমপুরে অন্য সংস্থার রান্নার গ্যাস সরবরাহ নিয়েও বিব্রত গ্রাহকরা। তাঁরাও বুকিং-এর প্রায় ৩০-৩৫ দিন পরে গ্যাস সরবরাহ করছেন বলে অভিযোগ। |
বহরমপুরের পাশাপাশি একই অবস্থা কান্দি ও লালগোলাতেও। গ্যাস সমস্যায় জেরবার পুরবাসিন্দারা দাবি করছেন গ্যাস নিয়ে বেআইনি কাজকর্ম হচ্ছে। তাঁদের দাবি, গৃহস্থরা যেখানে গ্যাস সিলিন্ডারের জন্য হা-পিত্যেস করে রয়েছেন, সেখানে অসংখ্য মিষ্টির দোকান-রেস্টুরেন্ট-হোটেল-উৎসব-অনুষ্ঠান বাড়িতে প্রকাশ্যে ‘ডোমেস্টিক’ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ। যেখানে ১৯ কিলোগ্রাম ২০০ গ্রাম ওজনের কমার্শিয়াল গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ১৫৪০ টাকা, সেখানে গৃহস্থের বাড়িতে ব্যবহৃত ১৪ কিলোগ্রাম ২০০ গ্রাম ওজনের ডোমেস্টিক গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ৪০৮ টাকা ৫০ পয়সা। ফলে গৃহস্থ বাড়ির ব্যবহারের সিলিন্ডারের বাণিজ্যিক ব্যবহার বাড়ছে। সম্প্রতি বহরমপুরের খাগড়া ঘাটবন্দর এলাকার একটি গুদাম থেকে গ্যাস চুরি চক্রের কয়েক জন পাণ্ডাকে হাতেনাতে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তবে বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের দেখা উচিত বলে দায় এড়ান গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার কর্তারা। পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “গৃহস্থদের জন্য যে সিলিন্ডার দেওয়া হয়, তা বেআইনি ভাবে ব্যবহার করছেন কিছু হোটেল, রেস্তোরাঁর মালিক। কিছু উৎসব বাড়িতেও একই ছবি দেখা যায়। ওই গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকেই দেখতে হবে, কী করে এই বেনিয়ম রোখা যায়।” আব্দুল কাদের বলেন, “এই নিয়ে আমাদের কাছে যদি সুনির্দিষ্ট ভাবে লিখিত অভিযোগ করা হয়, তা হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে বাণিজ্যিক ভাবে গ্যাস সিলিন্ডার নেওয়ার প্রবণতা এখন বেড়েছে।” |