ব্যারেটো-সুনীলের দাপটেই ছয় গোল
মোহনবাগান-৬ (নবি, সুনীল-২, ওডাফা-২, ব্যারেটো-পেনাল্টি)
লাজং-১ (সুভাষ)
সুনীল-ব্যারেটোরা ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় বোঝা যাচ্ছিল না মোহনবাগান ছ’গোল দিয়ে জিতেছে না কি হেরেছে! এতটাই চুপচাপ সবাই।
আসলে সব ফুটবলার জানেন মঙ্গলবার আই লিগে তিন নম্বরে উঠলেও সেটা ক্ষণস্থায়ী। মোহনবাগান ২৪ ম্যাচে ৪৩। হ্যালকে ৬-৪ গোলে হারিয়ে দুইয়ে পৌঁছে যাওয়া পুণে এফসি ২৩ ম্যাচে ৪৩। ব্যারেটোদের ঠিক পিছনে থাকা চার্চিল ২২ ম্যাচে ৪১। তাই রহিম নবির মতো সবার ভাবনাই এক, ছ’গোল নয়, তিন পয়েন্টটা আসল।
তিন পয়েন্টের আড়ালে ম্যাচটা আসলে হয়ে রইল দুই ফুটবলারের উত্তরপত্র। অনেক প্রশ্নের জবাব দিলেন দু’জনই। এক জন সবচেয়ে দামী দেশীয় স্ট্রাইকার। কিন্তু বদনাম, গোল চিনতে পারছেন না। তিনি সুনীল ছেত্রী। অন্য জন এক সময়ের মোহন-জনতার নয়নমণি। ইদানীং অনেকের কাছে ‘বুড়ো’। তিনি হোসে ব্যারেটো। ছ’টার মধ্যে তিনটে গোলের পাস এল ব্যারেটোর পা থেকে। ওডাফার দু’টো গোলের পিছনেই আবার সুনীলের অবদান। গত দুই ম্যাচের মতো সুব্রত ভট্টাচার্য এ দিনও মাঝমাঠে খেলালেন ম্যাচের সেরা সুনীলকে।
থ্রু বাড়ানোর ক্ষেত্রে যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছিল ব্যারেটো-সুনীলের। প্রথম ২০ মিনিট বলের দখল ছিল লাজংয়ের। হঠাৎই প্রতি আক্রমণে উঠে ওডাফার পাস ধরে বাঁ দিকে রহিম নবির দিকে ব্যারেটো যে পাসটা বাড়ালেন তা তাঁর স্বর্ণযুগ মনে পড়ায়। নবি ঠান্ডা মাথায় লাজং গোলকিপার সোরাম পোইরেইয়ের উপর দিয়ে চিপ করে ১-০ করেন। তিন মিনিটের মধ্যে ফের উড়লেন সবুজ তোতা। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে এগিয়ে থ্রু বাড়ালেন সুনীলকে। অফসাইড ট্র্যাপ করতে গিয়ে লাজং ডিফেন্স তখন থমকে। গোলকিপারের পাস দিয়ে নিখুঁত শটে ২-০ সুনীলের।
এই চক্রব্যূহ ভেঙেই ওডাফা-র দ্বিতীয় গোল। ছবি: উৎপল সরকার
গোলমেকার ব্যারেটো যখন ফুটছেন, গোলমেশিন ওডাফা ওকোলি তখনই ঝলসালেন। বিরতির আগেই ৩-০ ওডাফার। এ বার পাস সুনীলের। বিরতির পরই ওডাফা ৪-০ করলেন সুনীলের গড়ানো ফ্রি-কিক ধরে। ৭৬ মিনিটে সুনীল ডান পায়ের যে সোয়ার্ভিং শটে গোল করলেন সেটি অসাধারণ। এটিই বাগানের ছ’নম্বর গোল। ব্যারেটোর পেনাল্টি গোলেও সুনীলেরই অবদান। তাঁকেই বক্সে ফেলে দিয়েছিলেন লাজং ডিফেন্ডার। পেনাল্টি মারতে ওডাফা এগোতে যেতেই ব্যারেটো কথা বলেন তাঁর সঙ্গে। পরে ব্যারেটো স্বীকার করেন, তিনি পেনাল্টিটা মারতে চেয়েছিলেন। তার মিনিট দুয়েক আগেই একটি গোল শোধ দিয়েছিল পাহাড়ি দলটি। লালনুনমাওয়াইয়া-র দুর্দান্ত ক্রসে লাফিয়ে মাথা ছুঁইয়ে ১-৪ করেছিলেন সুভাষ সিংহ।
মারগাওতে সালগাওকর ম্যাচের আগে মনোবল জড়ো করলেও মোহনবাগান সেই ম্যাচে পাবে না আনোয়ারকে। হাতে বল লাগিয়ে এ দিন হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। হাঁটুতে চোট পাওয়ায় বিরতির আগেই জুয়েলের বদলে সৌভিককে নামাতে হয়। চোট অবশ্য গুরুতর নয়। হাফ ডজন গোল দেওয়ার দিনেও সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন ম্যানেজার বার্নার্ড ওপারানোজি। তাঁর কাছে ভাল খেলার ব্যাখ্যা, “নিজের নাম আর ক্লাবের নামকে রক্ষা করতেই ছেলেরা ভাল খেলেছে।” বিপক্ষ কোচ প্রদ্যুম রেড্ডি ভাবেননি এতটা হেনস্থা হতে হবে। আই লিগ শেষে লাজংয়ের বেশ কিছু ফুটবলার যাবেন ডেনমার্ক। ভাইকিং ক্লাবের সঙ্গে আদান-প্রদানের চুক্তি আছে তাদের। প্রদ্যুম ঠাট্টার সুরে বলছিলেন, “এখনই দলের অনেকে মনে করেছে ডেনমার্ক চলে এসেছে।” যা বললেন না সেটা হল, তাঁর রক্ষণ চূড়ান্ত ব্যর্থ। অফসাইড ট্র্যাপিং ঠিক মতো হয়নি। মোহনবাগানের দুই উইংকে স্বাধীন ভাবে খেলতে দিয়েছে।
ব্যারেটোও যাওয়ার আগে বললেন, “মাঝমাঠ খুব ভাল খেলেছে। উইং দিয়েও খেলাটা ছড়িয়েছে।” যেটা বললেন না, সেটা প্রায়শই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলে থাকেন। “বয়স নয়, এক জন প্লেয়ারের মাপকাঠি তার প্রতিভা আর পারফরম্যান্স।”

মোহনবাগান: শিল্টন, সুরকুমার, আনোয়ার, কিংশুক, নবি, মণীশ ভার্গব, জুয়েল (সৌভিক), সুনীল, হাদসন (স্নেহাশিস), ওডাফা, ব্যারেটো (অসীম)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.