ইচ্ছাকৃত ভাবে ফেলে রেখে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রচুর পরিমাণে চাল নষ্টের অভিযোগ উঠল হরিপালের সিপিএম পরিচালিত পশ্চিম গোপীনাথপুর পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতে স্মারকলিপিও দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সিপিএমের অবশ্য দাবি, তৃণমূলের ‘অনৈতিক’ আন্দোলনেই চাল বিলি করা যায়নি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে প্রায় ৪০০ কুইন্টাল চাল আসে ওই পঞ্চায়েতে। পঞ্চায়েত এলাকার অন্তর্গত ১৬টি গ্রামের বিপিএল তালিভুক্তদের মধ্যে ওই চাল বণ্টন করার কথা। অভিযোগ, শুধুমাত্র গোপালপ্রসাদ গ্রামে চাল বিলি করা হয়। কিন্তু আর কোথাও তা দেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েতের গুদামে ওই চাল মজুত রয়েছে। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি লাল্টু দে’র অভিযোগ, “এত দিন পড়ে থেকে চাল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চালে পোকা ধরে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতেই সিপিএম ওই চাল বণ্টন করল না। শীতের কম্বলও ওরা এখনও ফেলে রেখে দিয়েছে।” এ দিন প্রধান বাবুলাল মুর্মু পঞ্চায়েতে আসেননি। তৃণমূলের তরফে পঞ্চায়েত সচিবের হাতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। পঞ্চায়েতের ১২টি আসনের মধ্যে সব ক’টিই সিপিএমের দখলে।
ওই চাল আসার পর থেকেই তা বণ্টন নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে পঞ্চায়েতের বিরোধ বাধে। তৃণমূলের অভিযোগ, বহু ধনী লোকের নাম বিপিএল তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। তাঁরা দাবি জানায়, প্রকৃত গরিব মানুষদেরই ওই চাল দিতে হবে। ‘ধনী’দের দেওয়া যাবে না। ওই দাবিতে বিডিও-র কাছেও দরবার করেন তৃণমূলের নেতারা। সমস্যা মেটাতে দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনাও করে প্রশাসন। কিন্তু সুরাহা হয়নি। বিডিও ইজাজ আহমেদ অবশ্য বলেন, “বাকি চাল প্রধান নিশ্চয়ই বণ্টন করবেন। তবে ওই চাল পচে গিয়েছে, এমন কোনও খবর আমার জানা নেই।”
হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সিপিএম নেতা দীনবন্ধু কোলে বলেন, “পঞ্চায়েত ইচ্ছে করে চাল বিলি করেনি, এটা মিথ্যে। বিপিএল তালিকার দোহাই দিয়ে চাল বণ্টনে বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে অনেক বার আলোচনাও হয়েছে।” দীনবন্ধুবাবু বলেন, “তৃণমূল দাবি করছে, এপিএল তালিকাভুক্ত যে সমস্ত গরিব মানুষ রয়েছেন, তাঁদেরও চাল দিতে হবে। কিন্তু সরকারি বাধ্যবাধকতায় এটা সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। পঞ্চায়েত চাল অবশ্যই বিলি করতে চায়।” |