ঝাড়খণ্ডে রাজ্যসভার দু’টি আসনের ভোট বাতিল হওয়ার পর ফের নতুন করে ভোটের দিন ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। সঙ্গে সঙ্গেই ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘোড়া কেনাবেচা রুখতে সব থেকে বেশি তৎপরতা দেখা দিয়েছে রাজ্যের শাসক জোটের অন্যতম শরিক ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার মধ্যে। ঘোষণা করা হয়েছে, দলের কোনও বিধায়ক দলীয় প্রার্থী ছাড়া অন্য কোনও প্রার্থীর নাম প্রস্তাব বা সমর্থন করতে পারবেন না। উল্লেখ্য, বাতিল ভোটের সময়ে ‘ধনী’ নির্দল প্রার্থীর মনোনয়ন পত্রে প্রস্তাবকের ভূমিকা নিয়েছিলেন কয়েক জন জেএমএম বিধায়ক।
আজ কমিশন ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে জানিয়েছে, ৩ মে ঝাড়খণ্ডে রাজ্যসভার দু’টি আসনের ভোটগ্রহণ হবে। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শুরু হবে ১৬ এপ্রিল থেকে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৩ এপ্রিল। ২৬ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। রাজ্যসভার ভোট নিয়ে এ বার ঝাড়খণ্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী সব ক’টি রাজনৈতিক দলই খুব হিসেব করে পা-ফেলতে চাইছে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজ্যের শাসক জোটের অন্যতম প্রধান শরিক, বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব স্পষ্ট জানিয়েছেন, কোনও দলকে সমর্থন করা বা না-করার বিষয়টি আর আগের মতো ঝুলিয়ে রাখা হবে না। প্রথম থেকেই দলের অবস্থান স্পষ্ট করা হবে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী আজ বলেন, “দলের ভূমিকা আগাম বৈঠকেই চূড়ান্ত করা হবে। দলীয় অবস্থান নিয়ে যাতে কোনও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব না থাকে তা সুনিশ্চিত করা হবে গোড়াতেই।”
একই ভাবে রাজ্যসভার নির্বাচনে নির্দল প্রার্থীর প্রস্তাবক হওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় বিধায়কদের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করার কথা বলছেন সব দলই। এই ব্যাপারে সব থেকে বেশি সরব ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতৃত্ব। কারণ বাতিল ভোটে নির্দল প্রার্থীদের বেশির ভাগ প্রস্তাবকই ছিলেন জেএমএম বিধায়ক। গত ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত ভোটের দিন সকালে ওই নির্দল প্রার্থীর এক নিকটাত্মীয়ের গাড়ি থেকে ২ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়। এর পরেই ভোট কেনাবেচার অভিযোগ জোরদার ভাবে উঠে আসে। কার্যত ওই অভিযোগেই বাতিল হয় ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত ভোট। রাঁচি হাইকোর্টের নির্দেশে ওই ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। তবে সিবিআইয়ের তদন্তের কাজ সে ভাবে শুরু হতে না-হতেই নতুন করে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল ঝাড়খণ্ডে। নির্দল প্রার্থীর প্রস্তাবক হওয়ার প্রশ্নে এ দিন জেএমএম নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “নির্দল প্রার্থীর প্রস্তাবক না-হওয়ার জন্য দলীয় বিধায়কদের তো আগেও বলা হয়েছিল। এ বার বিষয়টি অন্য ভাবে ভাবতে হবে। যাতে দলীয় বিধায়করা কোনও নির্দল প্রার্থীর প্রস্তাবক না-হন, তা সাংগঠনিক স্তরে সুনিশ্চিত করা হবে।” রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র শৈলেশ সিংহ জানিয়েছেন, এ বারও রাজ্যসভার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী থাকবে। তবে কে প্রার্থী হবেন, তা ঠিক করবে দলের হাইকমান্ড। এর আগে দলীয় প্রার্থী ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ বালমুচু। |