খোদ রাজধানী রাঁচির বুকে দিনের আলোয় ঘটে গেল জোড়া খুনের ঘটনা। রাঁচির নামকুম এলাকায়, ঝাড়খণ্ড শিক্ষা পর্ষদ ভবনের মূল ফটকের সামনে আজ সকাল পৌনে দশটা নাগাদ খুন হলেন পর্ষদের দুই কর্মী। আততায়ীরা খুব কাছ থেকে পিস্তল থেকে গুলি করে বলে পুলিশ জানায়। পুলিশের অনুমান, খুনের কাজে আততায়ীরা নাইন এম এম পিস্তল ব্যবহার করেছে। শিক্ষা পর্ষদের সভানেত্রী লক্ষ্মী সিংহ জানিয়েছেন, নিহত দু’জনেই ছিলেন পর্ষদের অস্থায়ী কর্মী। এক জনের নাম নাম আশুতোষ মাহাত, তিনি কেরানির কাজ করতেন। দ্বিতীয় জনের নাম গোপী কেশরিয়ার। তিনি ছিলেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। দু’জনের বয়সই ৪০-এর কোঠায়।
পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকাল পৌনে ১০ টা নাগাদ একই সঙ্গে অফিসের মূল ফটকের সামনে একটি চায়ের দোকানে আসেন আশুতোষ এবং গোপী। প্রায় একই সময়ে একটি মোটরবাইকে চেপে ১৫ থেকে ২০ বছরের তিন তরুণ ওই চায়ের দোকানে হাজির হয়। পর্ষদের দুই কর্মীর সঙ্গে একই সঙ্গে চা এবং লিট্টি খায় তারা। ঘনিষ্ঠ পরিচিতের মতোই চা-খেতে খেতে মোটরবাইকে আসা তিন তরুণের সঙ্গে টুকটাক কথাবার্তা বলছিলেন আশুতোষ এবং গোপী। এরই মধ্যে কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক যুবক আচমকা পিস্তল বার করে আশুতোষ এবং গোপীর মাথায় এবং বুকে পর পর কয়েকটি গুলি করে মুহূর্তে মোটরবাইক চালিয়ে উধাও হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই পর্ষদ কর্মীর।
নামকুম থানার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নিহত গোপীবাবুর পকেট থেকে উদ্ধার হয়েছে ৬৬ হাজার টাকা। সাধারণ এক চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মীর পকেট থেকে ৬৬ হাজার টাকা পাওয়ার ঘটনা এই জোড়া-খুনের তদন্তে উল্লেখযোগ্য সূত্র হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, গোপীবাবু থাকতেন নামকুমে। আশুতোষবাবু ছিলেন রাঁচির সোনাহাটুর বাসিন্দা। দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। নিহত দুই কর্মীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সূত্র ধরে পুলিশ এই জোড়া খুনের পিছনে লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের গন্ধ পাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে জমি কেনাবেচা নিয়ে বিরোধের কথা শোনা যাচ্ছে। পাশাপাশি, নিহত দুই শিক্ষা পর্ষদকর্মীর সঙ্গে পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি গোষ্ঠীর নিয়মিত যোগাযোগ থাকার অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
ঝাড়খণ্ড শিক্ষা পর্ষদ কর্তারা জানিয়েছেন, নিহত গোপী জমি কেনাবেচার কারবার করতেন। কিন্তু আশুতোষ জমির কারবার করত বলে শোনা যায়নি। তবে এ বছর স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় কোডরমা জেলার পরীক্ষা সেলে কাজ করেছিলেন আশুতোষবাবু। পর্ষদ সভানেত্রী লক্ষ্মী সিংহ স্পষ্টই বলেছেন, “পর্ষদের দুই অস্থায়ী কর্মী খুনের পিছনে কোনও সন্দেহকেই খারিজ করে দেওয়া যায় না। খুনের সম্ভাব্য সব কারণ পুলিশ খতিয়ে দেখুক। তদন্তে এর কিনারা হবে বলেই আশা।” |