সরকারি প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে প্রায় ১১ লক্ষ টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল রামপুরহাটের হরিওকা গ্রামে। ওই গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। রামপুরহাট ১ ব্লকের বিডিও শান্তিরাম গড়াই বলেন, “কিছু অভিযোগের তদন্ত জেলা প্রশাসন থেকে করছে। কিছু অভিযোগের তদন্ত ব্লক প্রশাসন থেকে করা হয়েছে। রিপোর্ট ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হবে।”
হরিওড়া গ্রামটি রামপুরহাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির বড়শাল পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতে কর্মী তথা নির্মাণ সহায়ক রফিকুল আলম, প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান ফব-র প্রতিমা মণ্ডল, হরিওকা গ্রাম সংসদের সচিব বৈদ্যনাথ মণ্ডল এবং সমবায় সমিতির ম্যানেজার রামকৃষ্ণ মণ্ডলদের যোগসাজোসে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আর্থিক তছরূপ হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, ইন্দিরা আবাস গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে ২০১০-১১ আর্থিক বছরে গ্রামের ১১ জন উপভোক্তার মধ্যে দু’জন উপভোক্তা বাড়ি তৈরি করেছেন। বাকি ৯ জন বাড়ি না করেও প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ দু’দফায় ১৭,৫০০ টাকা করে পেয়েছেন।
তাঁদের প্রশ্ন, নিয়ম অনুযায়ী প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরে বাড়ি তৈরি শুরু হয়েছে কি না তার ছবি তুলে পাঠানোর পরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে হরিওকা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা তথা তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান প্রতিমা মণ্ডল প্রভাব খাটিয়ে তালিকায় উপভোক্তাদের ভুয়ো গৃহ নির্মাণ দেখিয়ে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাইয়ে দিয়েছেন। এমন কী প্রতিমাদেবীর মেয়ের নামও ঢোকানো হয়েছে।
বর্তমানে বড়শাল পঞ্চায়েতের প্রধান আছেন কংগ্রেসের সীমা লেট। তিনি বলেন, “ব্লক থেকে করা তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। তদন্তের পরে কয়েক জন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য পঞ্চায়েতে যোগাযোগও করেছেন।” প্রাক্তন প্রধানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর স্বামী বাসুদেব মণ্ডলের দাবি, “প্রধান থাকা কালীন আমার স্ত্রী কোনও রকম আর্থিক দুর্নীতি করেনি।” মঙ্গলবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, প্রতিদেবীর মেয়ে যে বাড়ি তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, সেটি একটি পুরনো ঘর। আর এক উপভোক্তা জ্যোতির্ময় মণ্ডলের পরিবারের দাবি, তাঁরা ঘর করতে পারেননি, এ বার করবেন।
শুধু ইন্দিরা আবাস নয়, ১০০ দিনের প্রকল্পেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ আছে ২০১১ সালের ৯ নভেম্বর ৮ জন জবকার্ড হোল্ডারের নামে টাকা তছরূপের প্রমাণ মেলে। সমবায় সমিতির ম্যানেজার রামকৃষ্ণ মণ্ডল আর্থিক বেনিয়মের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছিল। সেগুলি গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসে মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
অন্য দিকে, ভুয়ো মাস্টার রোল দেখিয়ে গ্রামের ৮টি পুকুরে মাটি কাটার জন্য প্রায় ৬ লক্ষ টাকার তছরূপ হয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এ প্রসঙ্গে প্রতিমাদেবীর স্বামী বাসুদেববাবু বলেন, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলা থেকে তদন্ত করে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।” ১০০ দিনের প্রকল্পে জেলা আধিকারিক সুপ্রিয় অধিকারী বলেন, “হরিওকা গ্রামে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগের তদন্ত চলছে। শীঘ্রই তদন্ত শেষ হবে। তার পরেই প্রকৃত সত্য উঠে আসবে।” আর ইন্দিরা আবাসে দুর্নীতি প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক প্রবীর বিশ্বাস বলেন, “বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করে খোঁজ নেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.