আদালতে দাঁড়িয়েই পুলিশের মারের দাগ দেখালেন আসামি
জলাসে দাঁড়িয়েই পোশাক খুলে আসামি বিচারককে দেখালেন, থানা লকআপে পুলিশ কী ভাবে তাঁকে ‘মারধর’ করেছে। তাঁর বক্তব্য শুনে কাটোয়ার এসিজেএম আজ, বুধবার মঙ্গলকোট থানার ওসি-কে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ৬ এপ্রিল খুনের আসামি জাহিরুল মল্লিককে চার দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কাটোয়া আদালতে। সেই পর্ব মিটতে এ দিন ফের তাঁকে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শুরু হতেই এজলাসে আসামি দাঁড়ানোর খাঁচা থেকে চিৎকার করে ওসি-র বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ জানান জাহিরুল। প্যান্ট নামিয়ে পিছন ফিরে দেখান মারধরের দাগ। গোটা ঘটনায় চমকে ওঠেন সকলেই। এসিজেএম অঞ্জনকুমার সরকার জাহিরুলকে খাঁচা ছেড়ে কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়াতে বলেন। জাহিরুল সেখানে গেলে বিচারক গোটা ঘটনার বিবরণ চান। জাহিরুল অভিযোগ করেন, মঙ্গলকোট থানায় নিয়ে গিয়ে রাতভর তাঁকে মারধর করা হয়েছে। শুধু পিছনে নয়, হাত-পায়ের চেটোতেও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে। বিচারক জানতে চান, কে মেরেছে? জাহিরুল বলেন, “থানার বড়বাবু (ওসি)।”
নিয়মমাফিক, আদালতে তোলার আগে নতুনহাট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জাহিরুলকে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু সেখানে তিনি কোনও উচ্চবাচ্য করেননি। জাহিরুলের দাবি, “পুলিশ বলেছিল, ডাক্তারের কাছে মারধরের কথা বললে আবার হেফাজতে নিয়ে পেটাবে। তাই ওখানে কিছু বলতে পারিনি। এখানে এসে সাহস করে বললাম।” তাঁর আইনজীবী দীপ্যেন্দুনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সব শুনে বিচারক মঙ্গলকোটের ওসি-কে ডেকে পাঠিয়েছেন। জাহিরুলকেও তখন ফের হাজির করাতে বলেন।” আপাতত তাঁকে জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলকোটের ওসি দীপঙ্কর সরকার অবশ্য এই অভিযোগকে আমল দিতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “প্রথমত, আমি আদালতের নির্দেশ পাইনি। তা ছাড়া, আসামিরা আদালতে এ রকম কত অভিযোগই তো করে!” গত ২৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলকোটে তৃণমূলের এক কর্মীকে খুন করার অভিযোগে গ্রেফতার হন তাদেরই ‘ঘনিষ্ঠ দুষ্কৃতী’ আজাদ মুন্সীর বাহিনীর জাহিরুল। আজাদের দাবি, “এখন তৃণমূলের যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে, মঙ্গলকোটের ওসি তাদেরই ধরে মারধর করছেন। আমার বৃদ্ধ বাবার সঙ্গেও পুলিশ এমনই আচরণ করেছে।”
এসডিপিও (কাটোয়া) ধ্রুব দাস অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর কথায়, “ওসি যা বলার আদালতেই বলবেন।” তবে রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের বর্ধমান জেলা পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক বলেন, “আইন অনুযায়ী, পুলিশ লকআপে কাউকে মারতে পারে না। এ ক্ষেত্রে যদি মারধরের অভিযোগ প্রমাণ হয়, আদালত ব্যবস্থা নেবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.