ট্রাফিক আইন মানতেই হবে, বলছে পুলিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
শহর জুড়ে পুলিশের পুলকার অভিযান শুরু হতেই নিয়ম শিথিল করার জন্য দাবি তুললেন গাড়ির চালকেরা। পুলিশ অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, কোনও কারণেই নিয়ম লঙ্ঘন বরদাস্ত করা হবে না।
মঙ্গলবার বেশ কিছু পুলকার রাস্তায় নামেনি। ফলে সময় মতো স্কুলে পৌঁছতে পারেনি পড়ুয়ারা। বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে হিমশিম খেয়েছেন অভিভাবকেরা। আবার অনেক পুলকার একই ভাবে বাচ্চা বোঝাই করে যাতায়াত করেছে। তবে এই পরিস্থিতিতে দ্রুত সমস্যার নিষ্পত্তি চাইছে সব পক্ষই।
|
আসানসোল পুলিশ সোমবার থেকেই শহরে পুলকার অভিযানে নেমেছে। মঙ্গলবার তা আরও বাড়ে। কিন্তু এ দিনই দল বেঁধে এডিসিপি (ট্রাফিক)-এর সঙ্গে দেখা করেন গাড়ি চালকেরা। তাঁদের দাবি, নিয়মনীতি কিছুটা শিথিল করতে হবে। যেমন, অটোরিকশা ও চার চাকার ছোট গাড়িতে কমপক্ষে ১০ জন ছাত্রছাত্রী বহনের অনুমতি দিতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের নিরাপদে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব নেবেন তাঁরা। বড় বাসের চালকদের দাবি, নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের পাশাপাশি ফাঁকা জায়গায় আরও কিছু আসন তাঁরা বসাবেন। যে সব পুলকারের বৈধ কাগজপত্র নেই সেগুলির জন্য সহজ শর্তে অপেক্ষাকৃত কম খরচে কাগজপত্র বানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে দিয়ে আসা-নিয়ে আসার কাজ করবেন না বলেও তাঁরা হুমকি দিয়েছেন। এ দিন রাস্তায় গাড়ি নামাননি নিমাই দাস। তাঁর বক্তব্য, “আমি অটোরিকশায় ১০ জন পড়ুয়া নিয়ে যাই। মাস প্রত্যেকে ২৫০ টাকা করে দেয়। কিন্তু এখন পুলিশ বলছে চার জনের বেশি বাচ্চা নিতে দেবে না। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হবে।” বড় গাড়ির চালক মহেন্দ্র সাউ বলেন, “তেল থেকে শুরু করে সব কিছুর খরচ বেড়েছে। কিছু বাড়তি আসন না বানালে আমাদের খরচ উঠবে না। আমরা সমস্যায় পড়ব।” আসানসোলের এডিসিপি (ট্রাফিক) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “অটোরিকশায় চার জন, ছোট গাড়িতে আট জন এবং বড় গাড়িতে নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনেই ছাত্র বহন করতে হবে। অন্যথা হলেই পুলিশ প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ করবে।” |
আবার কিছু পুলকার বন্ধ থাকায় বাচ্চা নিয়ে স্কুলে দৌড়তে হচ্ছে অভিভাবকদের। |
তবে এই দড়ি টানাটানির মধ্যে সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকেরা। সময় মতো বাচ্চাকে স্কুলে পৌঁছে দিতে তাঁরা হিমশিম খান। এমনই এক অভিভাবক মনিকা ঘোষের কথায়, “আমরা খুবই বিপাকে পড়েছি। তবে পুলিশের উদ্যোগ সমর্থনযোগ্য। গাড়িগুলির যা অবস্থা, তাতে আমরা সত্যিই আতঙ্কে থাকি।” সুভাষ রায় নামে আর এক অভিভাবকের দাবি, “পুলিশের এই উদ্যোগ স্বাগত। কিন্তু এর ফলে আমাদের যে সব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তা সমাধানের ব্যবস্থা পুলিশকেই করতে হবে।” আর এক অভিভাবক বিশ্বনাথ মিত্রের মতে, “পুলকারে ছাত্রের সংখ্য কমানো হলে আমাদের উপরে আর্থিক চাপ বাড়বে। পুলিশ একটা সামঞ্জস্য আনুক। যাতে আইনও বাঁচে, আবার অভিভাবক বা গাড়ি চালকদের ক্ষতি না হয়।”
এডিসিপি (ট্রাফিক) জানান, আজ, বুধবার পুলকার চালক ও স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। তবে গাড়ির চালকেরা নিয়ম না মানা পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযান চলবে।
|
মঙ্গলবার ছবিগুলি তুলেছেন শৈলেন সরকার। |