খিচুড়ি খাওয়ার পরে অসুস্থ বেশ কিছু পড়ুয়া, অভিভাবক
ঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে বেশ কয়েক পড়ুয়া। সোমবার ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শ্যামপুরের দক্ষিণ-দুর্গাপুর গ্রামে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে তাদের পরিবারের কিছু লোকজনও খিচুড়ি খেয়েছিলেন। তাঁদেরও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সব মিলিয়ে এ দিন ৪৮ জনকে কমলপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, খিচুড়িতে টিকিটিকি পড়ে গিয়েছিল। তার ফলেই বিষক্রিয়া হয়েছে। অসুস্থদের বেশির ভাগই বমি এবং পেটে যন্ত্রণার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
শ্যামপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (বিএমওএইচ) সুদীপ্ত মল্লিক বলেন, “যারা খিচুড়ি খেয়েছিল তাদের সকলকেই অভিভাবকেরা হাসপাতালে আনেন। এ ছাড়াও, যে সব মায়েরা খিচুড়ি খেয়েছেন তাঁরাও এসেছিলেন।” এ দিন দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামে একটি চিকিৎসা শিবির করা হয়েছে বলে বিএমওএইচ জানান। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন তিনি। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, শ্যামপুর ১ ব্লকের সিডিপিও মিঠু আচার্য বলেন, “খিচুড়ি পরিবেশন করার সময়ে তাতে কোনও টিকটিকি দেখা যায়নি। যে অভিভাবক খিচুড়িতে টিকটিকি দেখেছিলেন তিনিও তা ফেলে দেওয়ায় নমুনাও সংগ্রহ করা যায়নি। তবে যেখানে খিচুড়ি ফেলা হয়েছে আমরা সেই জায়গাটিতে অনুসন্ধান চালাচ্ছি। নমুনা পাওয়া গেলে এ বিষয়ে যদি কারও কর্তব্যে গাফিলতি থাকে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি স্থানীয় এ আর ডি প্রাথমিক স্কুল চত্বরে চলে। পাশাপাশি দু’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। দক্ষিণ দুর্গাপুর গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীরা যে কেন্দ্রটিতে আসে সেটি ১৭৯ নম্বর। এই কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন রিংকু মাইতি। তিনি এ দিন সকালে পড়ানোর পরে চলে আসেন কমলপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পালস-পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিতে। ছাত্র-ছাত্রীদের খিচুড়ি বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে আসেন পাশের কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চন্দ্রলেখা বাগের উপরে।
অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, পড়ানোর শেষে জনা কুড়ি ছাত্র-ছাত্রীকে খিচুড়ি দেওয়া হয়। তারা পাত্রে ভরে খিচুড়ি নিয়ে চলে আসে নিজের বাড়িতে। শেখ সরাফত আলি নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘আমাদের গ্রামের এক মহিলা হঠাৎ চিৎকার করে বলতে থাকেন “আমার মেয়েকে যে খিচুড়ি দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে একটা মরা টিকটিকি।” এর পরে ওই মহিলা সব খিচুড়ি ফেলে দেন।” এর পরেই পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সরাফত বলেন, “আমরা অনেকেই ছেলেমেয়েদের খিচুড়ি খাইয়ে ছিলাম। সকলের পেট ব্যথা হতে থাকে। বমিও করে অনেকে। অনেক মায়েরাও এই খিচুড়ি খেয়েছে। তারাও একই ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমার মেয়ে সায়মা অসুস্থ হওয়ায় আমি তাকে হাসপাতালে আনি।”
দুপুরের পর থেকে দলে দলে পড়ুয়াদের নিয়ে গ্রামবাসীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, যে ৪৮ জন ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে ১৯ জন অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের পড়ুয়া। তাদের বয়স পাঁচ বছরের নীচে। এ ছাড়াও ৬-১২ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়ে রয়েছে ১৯ জন। বাকিরা ১০ জন পড়ুয়াদের মা। বছর ১২ বয়সের একজনের অবস্থা ছিল গুরুতর। তার দু’একবার বমি হয়। পেটেও প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয়। তাকে স্যালাইন দেওয়া হয়। বাকিদের গা বমি হতে থাকে। পেটেও সামান্য যন্ত্রণা হয়। সন্ধ্যা নাগাদ সকলকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর। সেই কারণেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.