নিম্নমানের কাজের অভিযোগে অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের আর্থিক সাহায্যে সেতু নির্মাণ বন্ধ করে দিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। ময়নাগুড়ির ধর্মপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরগ্রাম এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এক সপ্তাহ থেকে ওই সেতুর কাজ বন্ধ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিম্নমানের লোহা ব্যবহার করেছেন ঠিকাদার। এ ভাবে সেতু তৈরি হলে উদ্বোধনের কয়েকদিনের মধ্যে ভেঙে পড়বে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ কর্তারা শনিবার ঘটনার খোঁজ নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের জলপাইগুড়ির প্রকল্প আধিকারিক সুজন দত্ত বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
বার্নিশ ও পুঁটিমারি গ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ গড়ে তুলতে দু’মাস আগে কয়া নদীর উপরে প্রায় ৩৬ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য খরচ হবে প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা। কিন্তু সেতুর স্তম্ভ তৈরির কাজ কিছুটা এগোতে এলাকার বাসিন্দারা বেঁকে বসেন। নির্দিষ্ট মাপের লোহা ব্যবহার না করার অভিযোগ তুলে তাঁরা এক সপ্তাহ আগে সেতুর কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ আন্দোলনে নামেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত শনিবার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হরিহর রায়বসুনীয় স্থানীয় বাসিন্দা ও ঠিকাদার সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। স্থানীয় গ্রাম উন্নয়ন কমিটির আশঙ্কা, এতটাই নিম্নমানের কাজ হচ্ছে যে সেতুটি তৈরির পরে ভেঙে পড়বে। কমিটির দুই সদস্য সুপ্রকাশ রায় এবং তপন রায় বলেন, “দশ বছর আগে এলাকায় একটি ছোট সেতু তৈরি হয়েছিল। নিম্নমানের কাজের জন্য কয়েকদিনের মধ্যে সেটা ভেঙে পড়ে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে নির্মিয়মাণ সেতুটিও ভেঙে পড়বে।” ঠিকাদার সংস্থার কর্তা অনুপ কুণ্ডু নিম্নমানের কাজের অভিযোগ অস্বীকার করেননি। তিনি নির্মাণ কাজে নিযুক্ত কর্মীদের উপরে দায় চাপিয়ে বলেন, “মিস্ত্রি ভুলবশত সিডিউল মতো রড ব্যবহার করেনি। তাই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।” রড ব্যবহারের আগে কেন তিনি দেখেননি? ওই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে অনুপবাবু বলেন, “পারিবারিক কারণে কয়েক দিন ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে না থাকায় ওই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ জন্য সেতুর সমস্যা হবে না।” যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা ঠিকাদারের ওই দাবি মেনে নিচ্ছেন না। তাঁদের অভিযোগ, হাতের কাছে ইঞ্জিনিয়ার না থাকলেও সিডিউল ছিল। কেন সেটা দেখে রড কেনা হয়নি! রড ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেননি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ হরিহর রায়বসুনীয়া। তিনি বলেন, “খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই সেতুতে সিডিউল মেনে রড ব্যবহার হয়নি। বিষয়টি অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের কর্তাদের জানানো হবে।” |