দার্জিলিং শহর ও সংলগ্ন এলাকার প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষকে জল সরবরাহের বালাসন প্রকল্প আরও এক ধাপ এগোল। সিডার চা বাগানের কাছে বালাসন নদীর জল মোট ৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পাহাড়ের উপর ৫ হাজার ফুট তুলে সিঞ্চল লেকে ফেলা শুরু হল সোমবার। জনস্বাস্থ্য মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ খবর জানিয়ে বলেন, “এখন সেনা ও পুর দফতরের কাজ শেষ হলেই আমরা জল সরবরাহ করতে পারব।” নদী থেকে ৩০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপে করে পাঁচ হাজার ফুট উপরে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে লেকে জল ফেলা শুরু হয় এ দিন সকাল থেকে। এর পর লেকের জল কিছুদূরে সিংধাপে কয়েক মাস আগে তৈরি আধুনিক জল শোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে বিশুদ্ধ জল পাঠানো হবে রকভিলস ও সেন্ট পলস স্কুলের সংলগ্ন জলাধারে। এর দূরত্ব ৯ কিলোমিটারের কিছু বেশি। এই পথের মাঝে রয়েছে জলাপাহাড়ের সেনা ক্যান্টনমেন্ট। ২০০৭ সালে এই জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার সময় থেকে ক্যান্টনমেন্টের সামনে সাড়ে ৪ কিলোমিটার লম্বা পথে পাইপ পাতার প্রয়োজনীয় অনুমতি এখনও দেননি সেনা কর্তৃপক্ষ। এ পথের বাকি অংশে পাইপ পাতা হয়ে গিয়েছে বলে জনস্বাস্থ্য কারিগরির এক সূত্র জানান। দুটি জলাধারের মোট ধারণক্ষমতা সাড়ে ৩ লক্ষ গ্যালন। এখান থেকেই দার্জিলিং শহরে জল সরবরাহ হওয়ার কথা। কিন্তু জল সরবরাহে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে সেনা অনুমতি এবং দার্জিলিং শহরে ব্রিটিশ আমলের পাইপলাইন। সেনা ক্যান্টনমেন্টের এক সূত্র জানান, এই প্রকল্প থেকে তাঁরাও বিশুদ্ধ জল পাবেন। কালিম্পংয়ে জনস্বাস্থ্যের সরবরাহ করা জল ২০ টাকা প্রতি কিলোলিটার দরে দেওয়া হয় সেখানকার ক্যান্টনমেন্টে। একই দর পাহাড়ের জন্যও থাকবে বলে জনস্বাস্থ্য দফতর সেনাবাহিনীকে জানায়। এ কথা উল্লেখ করে ফোর্ট উইলিয়ম এবং জনস্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দিল্লিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে পাইপ পাতার অনুমতি চেয়ে বার্তাও পাঠানো হয়। বিষয়টি ‘গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করা হচ্ছে’ বলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির চিঠি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে এসে পড়ে আছে মাস দুয়েক ধরে। কিন্তু এখনও কাজ শুরু করার সম্মতি মেলেনি। দ্বিতীয় অন্তরায় রাজ্য পুর দফতরের অন্তর্গত পুর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শ্লথতা। দার্জিলিং শহরে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রাচীন আমলের পাইপ বদলানোর জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে জেএনএনইউআরএম-এর টাকা পাওয়ার জন্য। কিন্তু দেরি হয়ে গিয়েছে। কারণ জেএনএনইউআরএম-এর প্রথম পর্ব গত মাসে শেষ হয়ে গিয়েছে। যতদিন না দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে, তত দিন সেখান থেকে টাকা পাওয়ার সুযোগ নেই। রাজ্য পুর দফতরের এক সূত্র এ কথা জানিয়ে বলেন, এই কারণে এখন চেষ্টা চলছে ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ডের টাকা পাওয়ার। |