আলিপুরদুয়ারে চিটফান্ড সংস্থার হাতে ‘প্রতারিত’দের পাশে দাঁড়িয়েছেন সব দলের নেতারাই। তাঁরা ‘ক্ষতিগ্রস্ত’দের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি, চিটফান্ডের ‘প্রতারণা’ ঠেকাতে রাজ্য সরকারের কাছে যথোচিত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানোর আশ্বাসও দিয়েছেন।
আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “চিটফান্ডের নামে প্রতারণা ঠেকাতে পৃথক আইন তৈরির জন্য রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করব। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সব বলব।” আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল নেতা মৃদুল গোস্বামী বলেন, “শীঘ্রই রাজ্য সরকারকে ওই প্রতারণার ব্যাপারে বিশদে জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করব।” আরএসপি-র জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে চিট ফান্ডের নামে কিছু সংস্থা সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছে। রাজ্য সরকারকে কড়া পদক্ষেপ করতে বলব।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুনীল ঘোষ জানান, এ ধরনের ‘প্রতারণা’র পুনরাবৃত্তি এড়াতে রাজ্য সরকারে যাতে উদ্যোগী হয়, সে জন্য আর্জি জানানো হবে। ‘আলিপুরদুয়ার অভিভাবক মঞ্চ’-এর সম্পাদক ল্যারি বসুর মন্তব্য, “সব দলের নেতারাই যখন একমত, তা হলে কোন চিটফান্ডগুলিকে ভরসা করা যায় তা নির্দিষ্ট করার জন্য রাজ্য সরকারকে রূপরেখা তৈরি করে দিতে হবে। আমরা গণস্বাক্ষর সংবলিত আবেদনপত্র মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠাব।”
পুলিশ সূত্রের খবর, যে সংস্থা প্রতারণা করে পালিয়েছে বলে অভিযোগ, তারা প্রায় চার বছর ধরে উত্তরবঙ্গের নানা এলাকায় ব্যবসা করেছে। দেড় বছরের মাথায় দ্বিগুণ টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় তাদের কাছে মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছিলেন বলে দাবি শামুকতলার সব্জি-বিক্রেতা সুধীর বিশ্বাসের। ফাঁসখোওয়া চা বাগানের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক সুলে কেরকেট্টার দাবি, তিনি প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে পাওয়া ১ লক্ষ টাকাই গচ্ছিত রেখেছিলেন। আচমকা সব অফিসে তালা ঝুলিয়ে ওই সংস্থার কর্তারা গা ঢাকা দেওয়ায় বিপাকে পড়েন তাঁদের মতো অনেকে।
গত শনিবার ওই চিটফান্ড সংস্থার চিফ ম্যনেজিং ডিরেক্টর অমৃতেন্দু ভট্টাচার্য-সহ ১১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। প্রায় ১৫ কোটি টাকা তুলে সংস্থার মালিকপক্ষ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “তদন্ত চলছে।” মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “পুলিশকে দ্রুত তদন্ত করতে বলা হয়েছে।” |