সিপিএমের লোকাল কমিটির পার্টি অফিসে তৃণমূল সমর্থকদের হামলার অভিযোগে সোমবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের ভাঙামালি এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছুদিন ধরেই কুকুরজান গ্রাম পঞ্চায়েতের এই এলাকায় দুই দলের সমর্থকরা পরষ্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করতে থাকায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা ছিল। সিপিএমের অভিযোগ, এদিন সকালে তৃণমূলের সমর্থকরা দলের ২ নম্বর লোকাল কমিটির অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পার্টি অফিসের ভেতরে টেবিল চেয়ার ভেঙে, কাগজপত্র লন্ডভন্ড করা হয় বলে অভিযোগ। পার্টি অফিসের ভেতরে টাঙানো বিভিন্ন নেতার ছবিও ভেঙে ফেলা হয় বলে সিপিএমের অভিযোগ। পার্টি অফিস দখল করে নেওয়ার চক্রান্তে তৃণমুলের সমর্থকরা পার্টি অফিসের সামনে খুঁটি পুঁতে তৃণমূলের পার্টি অফিসও তৈরি করেছে বলে সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ। তৃণমুলের তরফে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, রবিবার সিপিএমের একটি মিছিল থেকে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। ভাঙচুরের ঘটনাটি ‘সিপিএমের সাজানো’ বলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে। এদিন সকালে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হলে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ডিএসপি সদরকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।” সিপিএমের অভিযোগ, রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরেই এলাকার সিপিএম কর্মীদের ওপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। এদিন সকালে সিপিএমের পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ তুলে রাজগঞ্জ ও জলপাইগুড়িতে ধিক্কার মিছিলও করে সিপিএম। জলপাইগুড়ির সিপিএম সাংসদ রাজগঞ্জের কুকুরজান এলাকার বাসিন্দা মহেন্দ্র রায় বলেন, “রবিবার বিকেলে দলের একটি কনভেনশন ছিল। কনভেনশনের পরে সিপিএম সমর্থকেরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিলও করে। তারপরে রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় সিপিএম সমর্থকদের মারধর শুরু করে তৃণমূল সমর্থকেরা। এদিন সকালে এলাকার দোকানপাটও খুলতে দেয়নি ওরা। সিপিএম পার্টি অফিসে ঢুকে ভাঙচুর তান্ডব তো চালিয়েছেই। উপরন্তু পার্টি অফিসের সামনে খুঁটি পুঁতে নিজেদের পতাকা তুলে পার্টি অফিস দখলের চক্রান্ত হয়েছে। পুলিশের সামনেই সব ঘটনা ঘটেছে।” অন্যদিকে, তৃণমূলের দাবি এলাকার একটি উচ্চবিদ্যালয়ের গা ঘেঁষে সিপিএমের পার্টি অফিস তৈরি হওয়ায় সাধারণ বাসিন্দারা ক্ষুদ্ধ ছিলেন। রবিবার রাতে শান্তি মিছিলের নামে সিপিএমের সমর্থকরা তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসিত মন্তব্য করে। রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “এলাকায় সিপিএমের জনসমর্থন নেই। সে কারণেই দলনেত্রীর বিরুদ্ধে আশালীন মন্তব্য করে রাতের বেলায় সিপিএম মিছিল করে। আর দিনের বেলায় নিজেরাই পার্টি অফিস ভেঙে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষ এতে বিভ্রান্ত হবেন না।” |