সভা-মিছিলে রাস্তা আটকে দিনভর
দাবির ফাঁসে নাকাল শিলিগুড়ি
কালে দার্জিলিং মোড় লাগোয়া পঞ্চনই এলাকায় মোর্চার ভূতপূর্ব সৈনিক সঙ্ঘের মিছিল। দুপুরে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের হিলকার্ট রোডে মিছিল। বেলা তিনটে নাগাদ মোর্চা বিরোধী শিবির জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির শহরের মধ্যে মিছিল। দিনভর মিছিলে সোমবার অবরুদ্ধ হয়ে রইল শিলিগুড়ি। হিলকার্ট রোড, বিধান রোড এবং সেবক রোডে যানজটে আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। শহরের বিভিন্ন মোড়ে গাড়ির লম্বা লাইন দাঁড়িয়ে পড়ে। আটকা পড়ে স্কুল বাস। স্কুল ফেরত ছাত্রছাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় ছিল অটোর খোঁজে। সমস্যায় পড়তে হয় অফিস ফেরতা যাত্রীদেরও। কংগ্রেস এবং জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির মিছিলের কোনও অনুমতিই ছিল না। বিনা অনুমতিতে কী করে ওই দুটি মিছিল দিনভর শহর অবরুদ্ধ করে রাখল প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। দার্জিলিং জেলা পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার বলেন, “দুটি ক্ষেত্রেই আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ দুটি সংগঠনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বলে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “উন্নয়ন ব্যাহত করতে চক্রান্ত করে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে কংগ্রেস। এর পিছনে সিপিএমের হাত রয়েছে। পাশাপাশি যারা বন্ধ ডেকেছে তাদের আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে। মানুষের অসুবিধে করে মিছিল ঠিক নয়।”
ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক।
আজ, মঙ্গলবার গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (জিটিএ) তরাই ও ডুয়ার্স অন্তর্ভূক্ত করার প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে বন্ধের ডাক দিয়েছে তরাই ও ডুয়ার্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। বন্ধের সমর্থনে সংগঠনের সদস্যরা এদিন বিকাল ৪টা নাগাদ শিলিগুড়ি জংশন থেকে মিছিল বের করে হিলকার্ট রোড ধরে হাসমি চকে যায়। সেখানে রাস্তার মধ্যে সমর্থকদের বসিয়ে সভা করে তারা। আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সভা চলে। ফলে বিধান রোড এবং হিলকার্ট রোডের একাংশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে কমিটির নেতা তথা আইএনটিইউসির জেলা সভাপতি অলক চক্রবর্তী, কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টির অতুল রায়, আদিবাসী বিকাশ পরিষদের সভাপতি বীরসা তিরকিকে বার বার সভা শেষ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। অতুল রায় বলেন, “জিটিএ চুক্তি আমরা মানি না। সরকার অন্যায় ভাবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি তৈরি করেছে। তরাই ও ডুয়ার্স জিটিএ’তে অন্তর্ভূক্ত করার চক্রান্ত চলছে। তা কিছুতেই মানা হবে না। তাই আন্দোলনে নামা হয়েছে।” এদিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নির্দেশে পুলিশি সন্ত্রাসের অভিযোগ এবং সংবাদপত্র নিয়ে রাজ্যের নির্দেশিকা বাতিলের দাবিতে কংগ্রেসের ‘মহামিছিল’ হয় হিলকার্ট রোডে। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকারের নেতৃত্বে ওই মিছিল বের হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে গিয়ে বিভাগীয় মন্ত্রী গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানান মিছিলকারীরা। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগির দফতরে সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। বেলা আড়াইটা নাগাদ আন্দোলন শেষ হয়। জেলা কংগ্রেস সভাপতির অভিযোগ, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ মহকুমা জুড়ে সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বাছাই করে কংগ্রেস নেতা, কর্মীদের হেনস্থা করা হচ্ছে। মাটিগাড়া, শিবমন্দির, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র একই জিনিস চলছে। এর প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমেছি।” পাশাপাশি, শঙ্করবাবুর হুমকি, “শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমায় কংগ্রেস শক্তিশালী তা সবাই জানেন। পঞ্চায়েত, পুরসভা থেকে বিধানসভা ভোট, আসন পরিসংখ্যান তাই বলছে। গায়ের জোরে পুলিশ দিয়ে আমরা তৃণমূলকে এলাকা দখল করতে দেব না। প্রয়োজনে ইটের জবাব পাটকেল দিয়ে দেওয়া হবে।” এদিন সকালে বাস বোঝাই করে কংগ্রেস নেতা, কর্মীরা মহানন্দা সেতুর নিচে জড়ো হতে থাকেন। তার পরে জংশন, হাসমি চক হয়ে মিছিলটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে যায়। জেলা কংগ্রেস নেতা সুবীন ভৌমিক বলেন, “আমরা জোটকে দুর্বল নয়, শক্ত করার জন্যই দুর্বলতাগুলি তুলে ধরছি। সিপিএমের ৩৪ বছরের হার্মাদ তাড়াতে গিয়ে আমরা একটা উন্মাদের সরকার নিয়ে এসেছি। এর বিরুদ্ধে আমাদেরই লড়াই করতে হবে। সংবাদপত্র নিয়ে রাজ্য সরকারের অগণতান্ত্রিক নির্দেশ বাতিল করতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.