আগামী তিন বছরের মধ্যে রাজ্যে যাতে আরও কোনও ভূমিহীন পরিবার না থাকে সে জন্য চেষ্টা করব আমরা। সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গনে জেলায় ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ প্রকল্পের উদ্বোধন করে ৬ জনের হাতে জমির পাট্টা ও ঘর তৈরির টাকা তুলে দিয়ে এ কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলার বাগদা ব্লকের বাগদা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল এবং বিডিও অফিস চত্বরে বেশ কিছু পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই বেআইনি ভাবে বসবাস করছেন। ওই সব পরিবারের নিজস্ব কোনও জমি বা বাড়ি কিছুই নেই। জায়গা জবরদখলের কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো পরিষেবা দিতে পারছিলেন না। পাশাপাশি বিডিও অফিস চত্বরে থাকা অন্যান্য সরকারি দফতরগুলির সম্প্রসারণেও সমস্যা হচ্ছিল। সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি উদ্যোগী হয় বাগদা পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লক প্রশাসন। রাজ্য সরকারের ‘নিজ গৃহ, নিজ ভূমি’ প্রকল্পে ওই সব পরিবারের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। |
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাগদার বিডিও খোকনচন্দ্র বালা, হাসপাতাল এবং বিডিও অফিস চত্বরে জবরদখল করে বসবাসকারী ওই পরিবারগুলিরও বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। খোকনবাবু বলেন, “নিজেদের কোনও জমি না থাকায় ওই পরিবারগুলি বাসস্থান, পানীয় জল, শৌচাগার ও বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। ওই পরিবারগুলির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে হাসপাতালের সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা কাটবে। পাশপাশি বিডিও অফিস চত্বরে থাকা অন্য সরকারি দফতরগুলির সম্প্রসারণেও সমস্যা থাকবে না।”
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের মামাভাগ্নে মৌজায় সরকারি জমিতে বসবাসকারী ৭৫টি ভূমিহীন পরিবারকে ‘নিজ গৃহ নিজ ভূমি’ প্রকল্পে জায়গা দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পে প্রতিটি পরিবারকে ৩ কাঠা করে জমি কিনে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ঘর তৈরির জন্য ৪৫ হাজার করে টাকা। রাজ্যে এই প্রথম ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জমি কিনে তা ভূমিহীনদের মধ্যে বিলি করছে। এরই সূত্রে ধরে এ দিন বারাসতে এক অনুষ্ঠানে ৬টি পরিবারের হাতে ৩ কাঠা করে জমির পাট্টা এবং ঘর তৈরির জন্য ৪৫ হাজার করে টাকা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বাকি পরিবারগুলিকে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমির পাট্টা ও ঘর তৈরির টাকা দেওয়া হবে।
যে এলাকায় ওই সব পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে সেই মামাবাগ্নে মৌজায় ইতিমধ্যেই ৫০০ মিটার রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বাড়ি থেকে বেরোনোর রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। বসানো হয়েছে তিনটি গভীর নলকূপ, ট্যাপকলের লাইন। বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। |