রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা উত্তর ২৪ পরগনায় গিয়ে ফের ঢালাও কর্মসূচির ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহেই ইমামদের সম্মেলনে তাঁদের জন্য মাসিক ভাতা-সহ একগুচ্ছ সুবিধার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এইসব ঘোষণা পঞ্চায়েত ভোট সামনে রেখেই করা বলে অভিমত তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের।
সোমবার বারাসতে প্রায় ৭৫ হাজার সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীর হাতে বৃত্তি, ঋণ ও বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা তুলে দিয়ে মমতা বলেন, “সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সংখ্যালঘু ভাইবোনদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে সব জেলায় সংখ্যালঘু দফতর তৈরি হচ্ছে।” বারাসতে সংখ্যালঘুদের জন্য প্রশাসনিক ভবনেরও দ্বারোদ্ঘাটন করেন তিনি। |
মুসলিমদের জন্য তাঁর সরকার যে ‘সহানুভূতিশীল’, তা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সংখ্যালঘুদের স্বনির্ভর করতে চলতি বাজেটে সংখ্যালঘু উন্নয়নে ৭৩% বেশি বরাদ্দ হয়েছে।” তাঁদের মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও নিশ্চিত করতে ‘তৎপর’ মুখ্যমন্ত্রী ‘নিজ ভূমি, নিজ গৃহ’ প্রকল্পে বাগদার বাসিন্দাদের হাতে জমি ও টাকা তুলে দেন। দাবি করেন, “৩ বছরের মধ্যে যাতে রাজ্যে এক জন মানুষও ভূমিহীন না থাকেন সে চেষ্টাই করব।” জেলার আয়লা ক্ষতিগ্রস্তদের হতে ‘ফুড-কুপন’ তুলে দিয়ে মমতা বলেন, “বৈশাখ থেকে এটা দেখিয়ে আপনারা এলাকা থেকেই ২ টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল পাবেন। কয়েক দিনের মধ্যেই আবার আসব। সে দিন ৩৫ হাজার কৃষককে কৃষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে।” মাদ্রাসার অনুমোদনের বিষয়ে মমতা বলেন, “আগে অনুমোদনে কড়াকড়ি ছিল। এখন সেগুলি অনেক শিথিল হয়েছে। ফলে এখনই টাকা দিতে না পারলেও মাদ্রাসার অনুমোদন দিয়ে দেব।” |
অনুষ্ঠান মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গরিব হজযাত্রীরা যাতে বঞ্চিত না হন, সে জন্য অনলাইনে পাসপোর্ট-ভিসার আবেদনের ব্যাপারটা চট করে চালু না করতে অনুরোধ করেছি কেন্দ্রকে।” অদূর ভবিষ্যতে জেলার প্রশাসনিক ভবন থেকেই অনলাইন ব্যবস্থা-সহ তাঁদের জন্য যাবতীয় প্রকল্প সম্পর্কে জানা যাবে বলে তিনি জানান।
আগের সরকারকে ‘কটাক্ষ’ করে তাঁর মন্তব্য, “আগে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে কোনও কাজ হত না। এ বার জেলায় জেলায় ‘এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক’ তৈরি হবে। সেখান থেকেই সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলি প্রার্থী নিয়োগ করতে পারবে।” হাড়োয়া, ঠাকুরনগরে দু’টি আইটিআই কলেজ তৈরি হবে বলে এ দিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বসিরহাট ও বারাসত স্টেডিয়ামের উন্নয়নে ২ সাংসদ হাজি নুরুল ইসলাম এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে তাঁদের সাংসদ তহবিল থেকে ১ কোটি টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় খেলাধুলার মানোন্নয়নে বিধায়কদের তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা করে জেলাশাসককে দেওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। পরে দিল্লি রওনা হওয়ার আগে নির্মীয়মাণ নতুন বিমানবন্দরের কাজ ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। জুনেই কাজ শেষ করতে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। |