ঘুম ভাঙছে না বন বিভাগের
দিনে-দুপুরে বিকোচ্ছে ভড়ুই
সাত সকালে গলির মুখে হাঁক পড়ছে, ‘ভড়ুই চাই গো-ও-ও’।
ডাকটা নতুন নয়। বহরমপুর কিংবা কান্দি-বেলডাঙার গঞ্জে বসন্তের গোড়ায়, ছেঁড়া মশারি কিংবা ঝাঁকায় এক বিঘতের ছোট্ট পাখিগুলো নিয়ে বিক্রির রমরমা এ মুরসুমেও ফিরে এসেছে ফের। চেনা চড়ুইয়ের মতো মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো ছোট্ট ভড়ুই দেদার বিকোচ্ছে দেড়শো থেকে দুশো টাকা ডজনে। খান চারেক পাখিতে বড় জোর আড়াই-তিনশো মাংস। তাই সই। সাইকেলের ক্যারিয়রে রাখা ঝাঁকা হাতড়িয়ে জ্যান্ত-মৃত ভড়ুই নিয়ে বীর দর্পে বাড়ি ফিরছে বহরমপুর থেকে কান্দির মানুষ। কিছু দিন আগে পড়শি জেলা নদিয়া জুড়েও খোলা হাটেই দেদার ভড়ুই বিক্রির খবর মিলছিল। আনেক উপরোধে প্রশাসন আর বন বিভাগ গা ঝাড়া দেওয়ায় এখন অন্তত খোলা বাজারে ছোট্ট পাখিগুলির বিক্রি-বাট্টা তেমন দেখা যায়না। তবে মুর্শিদাবাদের ‘ঘুম ভাঙেনি।’ ঘুমিয়ে বন বিভাগও।
মশারি-জালে ভড়ুইয়ের ঝাঁক। নিজস্ব চিত্র।
জেলায় জুড়ে এ সময়ে ভড়ুইয়ের কদরও তাই যথেষ্ট। নমঃ নমঃ করে পুলিশ যে দু-এক বার ‘লোক দেখানো’ অভিযান চালায়নি, এমন নয়। বেলডাঙার বড়ুয়া মোড়ে ভড়ুইয়ের খোঁজে দিন কয়েক আগে হানা দিয়েছিল স্থানীয় থানার পুলিশ। সে বার পাখি পেলেই পালিয়েছিল বিক্রেতা। কী আর করা, পুলিশ পাখি ধরে মুক্তি দিয়েছিল খোলা আকাশে। তবে এখনও যে তাঁর এলাকায় দেদার বিকোচ্ছে ভড়ুই, মেনে নিয়েছেন বেলডাঙা থানার ওসি বিশ্ববন্ধু চট্টরাজ। বলছেন, “বেলডাঙা থানার বেশ কিছু এলাকায় গোপনে ভড়ুই পাখি বিক্রি হয় বলে শুনেছি। কিন্তু খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতেই পাখি ফেলে বিক্রেতারা পালিয়ে যায়।” বহরমপুরের রেঞ্জ অফিসার সত্যনারায়ণ পোদ্দার বলেন, “ভড়ুই অত্যন্ত গোপনে বিক্রি হয়। বেলডাঙার বেগুনবাড়ি, বড়ুয়া মোড় ছাড়াও খাগড়াঘাট স্টেশন এলাকায় পাখি বিক্রি হয় বলে শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও অভিযান হয়নি।” কেন? উত্তর মেলেনি।
প্রথম বসন্ত থেকে বর্ষার প্রাক্কালে ধান জমি আর বিলের আশপাশের জলায় ঝাঁকে-ঝাঁকে ভড়ুই নামে। তাদের ধরা তেমন কঠিন নয়। জাল মায় মশারি পেতে বসলেও সকালে খান পঞ্চাশ ভড়ুই মেলা প্রায় বাঁধা। অনেক সময়ে ধানি জমিতে দু প্রান্তে বাঁশের খুঁটি পুঁঁতে তাতে মশারির জাল বেঁধে রাখা হয় তাড়া দিতেই নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া ভড়ুইয়ের ঝাঁক ধরা পড়ে যায় মশারির জালে। কান্দির হিজল ও খোশবাসপুরের বিলে এখন পাখি মিলছে দেদার। পড়শি বীরভূম থেকেও আসছে। বেলডাঙার বেগুনবাড়ি-বড়ুয়া মোড়, কান্দির নগর-হিজলে রণগ্রাম সেতুর কাছে, বহরমপুরের খাগড়া স্টেশন এলাকায় অবাধে পাওয়া যাচ্ছে ভড়ুই। লালবাগে ভাগীরথীর পশ্চিম পাড় এলাকাতেও ওই পাখি বিক্রি হচ্ছে। হিজলের বাসিন্দা মানিক শেখ বলেন, “ভরা মরসুমে এলাকার বহু মানুষ ভড়ুই বিক্রি করে।” আগে ২০০ টাকা ডজনে বিক্রি হলেও শনিবার ১৬০ টাকা এবং সোমবার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.