বিহারের রাজনীতিতে ফের লালু-পত্নী রাবড়ী দেবীর পদার্পণ। প্রায় দু’বছর রাজনীতি থেকে দূরে থাকার পর তিনি শেষ পর্যন্ত বিধান পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হলেন। রবিবার আজজেডি-র পরিষদীয় দলের বৈঠকে প্রার্থী হিসেবে রাবড়ী দেবীর নাম চূড়ান্ত হয়েছে। এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব। দলের সাংসদ ও রাজ্য সভাপতি রামকৃপাল যাদব বলেন, “বিধান পরিষদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে রাবড়ী দেবীর নাম সর্বসম্মত ভাবে চূড়ান্ত হয়েছে। তিনিই আমাদের দলের একমাত্র প্রার্থী।” রাবড়ী দেবীর প্রার্থী হওয়াকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সোমবার বলেন, “তাঁর প্রতি আমার শুভ কামনা রইল। আশা করি বিধান পরিষদে তাঁর সঙ্গে দেখা হবে।”
বিধান পরিষদ নির্বাচন আগামী ১৬ এপ্রিল। হিসেব মতো আরজেডি এই নির্বাচনে একটি আসন পায়। সেই আসনেই দলের পক্ষ থেকে রাবড়ী দেবীকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই আরজেডি, এমন কী জেডিইউ শিবিরের নেতারাও মনে করছেন। ২০১০ সালে রাঘোপুর বিধানসভা আসনে রাবড়ী দেবী পরাজিত হন। তারপর থেকে তিনি রাজনীতি থেকে দূরে সাংসারিক কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। রাজনৈতিক বিষয়ে কোনও রকম ভাবেই আর তিনি জড়াননি।
সেই রাবড়ী দেবীকে বছর দুয়েক পরে কেন ফের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাবে তাঁর দলের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছে, ফিরিয়ে আনার ব্যাপার নয়। তিনি তো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সামনে কোনও নির্বাচন না থাকায় তিনি সংসদীয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারেননি। পরিষদীয় নির্বাচন ফের সেই সুযোগ সামনে এনে দিয়েছে।
অন্য দিকে, দলের অপর একটি অংশ মনে করছে, আগামী দিনে লালু প্রসাদ যাদব ফের পটনায় এসে রাজ্য-রাজনীতিতে অংশ নেবেন। সেই কথা মনে রেখেই লালু ফের রাজনীতির ময়দানে রাবড়ী দেবীকে হাজির করাচ্ছেন। লালু অবশ্য নিজেই বলেছেন, “এপ্রিলের পরেই রাজ্য-রাজনীতিতে বেশি সময় দেব। প্রতিটি জেলায় যাব। মানুষকে জিজ্ঞাসা করব, নীতীশ সরকারের কাছ থেকে তাঁরা কী পেয়েছেন, আর কী হারিয়েছেন?” রাজ্যের পরিস্থিতি যে ভাল না তা জানিয়ে লালুর অভিযোগ, “রাজ্যে দুর্নীতি চরম সীমায় পৌঁছেছে। আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। এই সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থ।”
তিনি উত্তরপ্রদেশের তুলনা টেনে নীতীশকে আক্রমণ করে বলেন, “এই সরকারের অবস্থা হবে মায়াবতীর মতো।” |