সিইএসসি-র বিদ্যুৎ সংযোগ দূরে থাক, ডাঁই করে রাখা সব লোহার রড আর টিনের ভাঙা কাঠামোও এখনও সরানো হয়নি। সেই অবস্থায় যাবতীয় ঝুঁকির আশঙ্কা নিয়েই সোমবার ফের চালু হয়ে গেল হাতিবাগান বাজার।
এ দিন বাজার খোলার খবর চাউর হতেই সাতসকালে অনেকে ব্যাগ হাতে পৌঁছে যান হাতিবাগানে। কিন্তু সেখানকার হাল দেখে আঁতকে ওঠেন সকলেই। চার দিক তখনও লোহালক্কড়ে ভর্তি। স্থানীয় মানুষেরও বক্তব্য, এ ভাবে বাজারে ঢোকা রীতিমতো ঝুঁকির। তাই যে ব্যবসায়ীরা রবিবার বাজারে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য সিইএসসি-র বিরুদ্ধে সরব ছিলেন, এ দিন ক্রেতাদের মনোভাব বুঝে তাঁদেরও সুর নরম। ক্রেতাদের টানতে এখন নিয়ম মেনেই বিদ্যুৎ ফেরাতে চান তাঁরাও। এ দিকে, সিইএসসি কর্তৃপক্ষ এ দিনও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনীয় কাগজ-সহ আবেদনপত্র জমা না পড়লে ওই বাজারে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া যাবে না।
গত ২২ মার্চের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে বেসরকারি হাতিবাগান বাজারের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে যায়। দুমড়ে-মুচড়ে যায় মাছ ও সব্জি বাজারের স্থায়ী কাঠামো। আগুনের তাপে তিনতলা বাজারের বেশ কিছু দালানের শক্ত কাঠামো ফেটে যায়। ঘটনার পরের দিন থেকেই কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের কর্মীরা বিপজ্জনক অংশ ভাঙার কাজ শুরু করেন। |
এই পরিস্থিতির মধ্যেই নববর্ষের আগে ব্যবসা চালু করার দাবিতে সরব হন সেখানকার ব্যবসায়ীরা। ভাঙাচোরা কাঠামোর মধ্যেই দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন কেউ কেউ। কিন্তু এ অবস্থায় পুরোদমে বাজার চালু করা যুক্তিযুক্ত হবে কি না, তার ফয়সালা করতে আজ, মঙ্গলবার পুলিশ, দমকল ও সিইএসসিকে নিয়ে বৈঠক করবে পুরসভা।
সোমবার পুরসভার এক অফিসার বলেন, “তিনতলায় আমাদের কর্মীরা বড় বড় হাতুড়ি দিয়ে বিপজ্জনক জায়গাগুলি যখন ভাঙছেন, তখন নীচে বাজারের ক্রেতারা ঘোরাফেরা করছেন। এ ভাবে কি কাজ করা যায়?” তিনি জানিয়েছেন, কোনও কোনও ব্যবসায়ী আবার বিপজ্জনক অংশ ভাঙতে দিতে রাজি না থাকায় ঢিমেতালে কাজ করতে হচ্ছে। সব থেকে সমস্যা হচ্ছে বাজারে জমে থাকা ভাঙাচোরা মাল নিয়ে। যদিও ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সম্পাদক অভিজিৎ সাহা বলেছেন, “ওই সব লোহা লক্কড়গুলি তো মালিকদের। ওঁদের লোক এসে মালগুলি তুলে নিয়ে যাবে।”
এ দিকে, বাজারে বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে সিইএসসি-র সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস দত্ত বলেন, “সংযোগ দিতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু ওই বাজারের ওয়্যারিং প্রস্তুত আছে কি না, তা জানিয়ে একটি আবেদন (টেস্ট ফর্ম) জমা দিতে হয়। সেটি জমা না পড়লে কিছু করার নেই।” |