শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-অসন্তোষ ও শিক্ষক-হেনস্থার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ছে না কিছুতেই। তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন কলকাতারই দু’টি প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং দমদমের মতিঝিল কলেজ। পরীক্ষার খাতার দ্বিতীয় বার পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে সোমবার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক দল ছাত্রের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জেরে ওই বিভাগের অধ্যাপক চিদানন্দ ভট্টাচার্য অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। তাঁকে এলাকার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। এ দিনই মতিঝিল কলেজে অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায় ওই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক দল ছাত্র। বিক্ষোভকারীদের দাবি, টেস্টে অসফল হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় তাঁদের বসতে দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, চিদানন্দবাবু বিভাগীয় প্রধান থাকাকালীন এমএ প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পুনর্মূল্যায়নে ১৩৫ জন প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। তার আগে স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের পুনর্মূল্যায়ন হয়েছে। তার ফলে ছাত্রছাত্রীরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তাঁরা ফের পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে তাঁকে চাপ দিতে শুরু করেন। গত ১৯ মার্চ চিদানন্দবাবু বিভাগীয় প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়ার পরেও চাপ কমেনি। |
এ দিন দুপুরে এক দল পড়ুয়া শিক্ষকদের বসার ঘরে গিয়ে চিদানন্দবাবুকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন বলে অভিযোগ। এতে ওই শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ছাত্রছাত্রীদের একাংশই তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। চিকিৎসকদের পরীক্ষানিরীক্ষার পরে নার্সিংহোম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় চিদানন্দবাবুকে।
রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য চিন্ময় গুহ বলেন, “উনি (চিদানন্দবাবু) কয়েক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। এ দিনের অসুস্থতা তারই জের কি না, বলতে পারব না। তবে যদি ছাত্রদের হাতে হেনস্থা হয়ে থাকেন, তা হলে সেটা দুঃখজনক।” তবে উপাচার্যের মতে, কেন এক জন শিক্ষকের বিরুদ্ধেই বারবার ছাত্রদের ক্ষোভ জমছে, সেটাও দেখা দরকার। উপাচার্য জানিয়ে দেন, পরীক্ষার খাতা দ্বিতীয় বার পুনর্মূল্যায়নের বিধি নেই। এ দিনই পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে মতিঝিল কলেজে অধ্যক্ষকে হেনস্থা করেন এক দল ছাত্র। অধ্যক্ষের ঘরে ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ। ভাঙচুর চলে কলেজের অফিসঘরেও। অধ্যক্ষ-সহ কয়েক জন শিক্ষককে প্রায় দু’ঘণ্টা ঘেরাও করেও রাখা হয় কলেজ-চত্বরে। পরে দমদম থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। মতিঝিল কলেজ সূত্রের খবর, ২৭ মার্চ বিএ, বিএসসি পার্ট টু-র টেস্টের ফল বেরোয়। ২৪ জন পড়ুয়া অকৃতকার্য হন। অধ্যক্ষ দীপক চক্রবর্তী বলেন, “যারা অকৃতকার্য হয়েছে, তারা সব বিষয়েই অত্যন্ত কম নম্বর পেয়েছে। এ দিন ওরা আমার ঘরে ভাঙচুর চালায়।” |