বিদ্যুৎস্পর্শে মৃত ৩
ঝড়ে গাছ পড়ে বিপর্যস্ত ট্রেন, আটকে রাস্তাও
লতি মরসুমে ছন্দে একটু বদল এনেছে কালবৈশাখী। তবে সোমবার তার দাপট সব ভেল্কিকে প্রায় ছাপিয়েই গেল। সন্ধ্যার প্রবল ঝড়ে বিমানবন্দরের রানওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা ফাঁকা একটি বিমানের মুখই গেল ঘুরে! ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার গতিবেগের ঝড়ের দাপটে উল্টে গেল বিমানে ওঠার বেশ কয়েকটি সিঁড়ি। পরে ক্রেন এনে সেই সব সিঁড়ি দাঁড় করানো হয়। ঝড়ের তাণ্ডবে বিমান ওঠানামা বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে। নামতে না-পেরে আকাশে চক্কর কাটতে থাকে ১২টি বিমান।
শুধু বিমান চলাচল নয়, কালবৈশাখীতে টালিগঞ্জ ও নিউ গড়িয়ার মাঝখানে গাছ পড়ে আটকে যায় মেট্রো। বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে যাওয়ায় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন। স্টেশনে উপচে পড়ে ভিড়। দক্ষিণ ও উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় গাছ পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। গড়িয়াহাট উড়ালপুলের উপরে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে যায় গাড়ি। অফিসফেরত মানুষ সমস্যায় পড়েন। বেলুড়ে ছিঁড়ে পড়া রাস্তার তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন এক যুবক। গোঘাটের কামচা গ্রামের মাঠে ছিঁড়ে পড়া হাইটেনশন তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় গৌরী তপস্বী এবং ভানুমতী ঘোষ নামে দুই মহিলার। তবে সেখানে তারটি ছিঁড়ে গিয়েছিল রবিবারের ঝড়ে। সোমবারের ঝড়টি ছিল এপ্রিলের তৃতীয় কালবৈশাখী। গত সপ্তাহে বুধ এবং বৃহস্পতিবার পরপর দু’দিন ঘণ্টায় যথাক্রমে ৯২ এবং ৭০ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী বয়ে গিয়েছিল কলকাতার উপর দিয়ে। এ দিন উল্লম্ব মেঘ ভেঙে পড়ে দমদমের উপরে। দমদমে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। তবে কলকাতায় তার গতিবেগ ছিল ৪২ কিমি।
তবে কলকাতা বিমানবন্দরে এ দিন যা হয়েছে, তার নজির সাম্প্রতিক কালে নেই। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ ঝড় শুরু হয়। বিমানবন্দরের রানওয়ের ২০ নম্বর বে-তে দাঁড়িয়ে ছিল জেট এয়ারওয়েজের ছোট এটিআর-৭২ বিমান। তাতে যাত্রী ধরে ৭০ জন। বিকেলেই ইম্ফল থেকে এসেছিল বিমানটি। বিমানবন্দরের এক অফিসার জানান, তখন প্রচণ্ড বেগে ঝড় চলছে। পূর্ব দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল জেটের ওই ছোট বিমান। সন্ধ্যা সওয়া ৭টা নাগাদ দেখা যায়, ঝড়ের ধাক্কায় বিমানটির মুখ উত্তর দিকে ঘুরে গিয়েছে। তিনি বলেন, “চাকরি করছি প্রায় ২৬ বছর। এমন ঘটনার কথা কখনও শুনিনি।” ঝড়ের দাপটে প্রায় ১৩ হাজার কিলোগ্রাম ওজনের একটি বিমানের মুখ যে ঘুরে যেতে পারে, তা আন্দাজ করতে পারেননি কর্মীরা। মঙ্গলবার ভোরে যাত্রী নিয়ে ওড়ার কথা। ঘুরে যাওয়ার সময়ে বিমানটির সঙ্গে কোনও কিছুর ধাক্কা লাগেনি। তাই বিমানের বিশেষ ক্ষতি হয়নি। ঝড়ের জন্য ১২টি বিমান ৪০ মিনিট ধরে চক্কর কাটার পরে একে একে নামে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিমানবন্দরের উপর দিয়ে যে-কালবৈশাখী বয়ে যায়, তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ কিমি। ওই ঝড়ের স্থায়িত্বও ছিল বেশি। বেশি ছিল তার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাও। পরিমণ্ডলে ঘূর্ণাবর্ত সক্রিয় থাকায় কালবৈশাখী এত শক্তিশালী হয়েছে। আজ, মঙ্গলবারেও কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.