নাবালক দুই সন্তানকে ফিরে পেতে মহারাষ্ট্রের থানে জেলার বিমুণ্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মা অনিমা সাহা। থানে আদালতের নির্দেশে শনিবার কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রাম থেকে তাঁর দুই সন্তান মানব ও মণিকাকে উদ্ধার করেছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। সোমবার কাটোয়ার এসিজেএম অঞ্জনকুমার সরকার তাদের বাবা স্বপনকুমার সাহাকেই সন্তানদের দায়িত্ব দিলেন। স্বপনবাবুর আইনজীবী রবিশঙ্কর দাস বলেন, “বিচারক কয়েকটি শর্তে স্বপনবাবুকেই তাঁর ছেলেমেয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ বছর আগে ভাতার থানার বাসিন্দা স্বপনবাবুর সঙ্গে বিয়ে হয় হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা অনিমাদেবীর। কিছুদিনের মধ্যে তাঁদের দুই সন্তানও হয়। সেই সময়ে তাঁরা মুম্বইতেই ছিলেন। বিয়ের পাঁচ বছর পরে দুই সন্তান মানব ও মণিকাকে নিয়ে রাজ্যে ফিরে আসেন স্বপনবাবু। কাটোয়ায় তাঁর দিদি রেখারানিদেবীর কাছেই রেখেছিলেন ওদেরকে। চলতি বছরে অনিমাদেবী বিমুণ্ডি থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁর স্বামী তাঁর দুই নাবালক সন্তানকে আটকে রেখেছেন। তাদের ফিরে পাওয়ার জন্য থানায় আবেদন জানান তিনি।
রবিবার দুপুরে কাটোয়ার এসিজেএম অঞ্জনবাবু দুই পক্ষেরই বয়ান শোনেন। নিজের ঘরে আলাদাভাবে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কাটোয়া থানার ওসি ও মহারাষ্ট্র পুলিশকে। স্বপনবাবুর সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। এর পরেই সন্ধ্যা নাগাদ ওই রায় দেন তিনি।
রায় শুনে খুশি স্বপনবাবু ও রেখারানিদেবী। রেখারানিদেবী বলেন, “খুব ছোট থেকে ওরা আমার কাছে বড় হয়েছে। ওদের ছাড়া আমিও থাকতে পারতাম না। বিচারকের রায়ে খুশি আমি।” স্বপনবাবুও বলেন, “এত দিন কোনও খবর না নিয়ে হঠাৎ কেন ওদের মা এখন ওদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে বুঝতে পারছি না।” অনিমাদেবীর বাবা অরূপ মাইতি অবশ্য বলেন, “আদালতের নির্দেশ হাতে পেলে নাতি নাতনিকে ফিরে পাওয়ার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।”
কিন্তু, মানব, মণিকা? চতুর্থ শ্রেণীর ওই দুই ছাত্র-ছাত্রীর কথায়, “বাবাকে ছেড়ে যাব না আমরা। মায়ের কথা মনেই পড়ে না আমাদের।” |