রয়েছে ‘বাস বে’। সামনেই রয়েছে যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য শেড। ২ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে আসা দূরপাল্লার বাসগুলির দাঁড়ানোর কথা সেখানেই। অথচ বাস দাঁড়ায় জাতীয় সড়ক ও মুচিপাড়ার মোড়েই। ফলে সামনে বা পিছন থেকে আসা বাস দেখতে পাওয়া যায় না। ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করতে হয় পথচারীদের। যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা, এমনই দাবি এলাকার মানুষের। অবিলম্বে কড়া ট্রাফিক বিধি বলবৎ করা হোক, দাবি তাঁদের।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানান, ২ নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরি হওয়ার পরেই ব্যস্ততম মোড়গুলি থেকে সামান্য আগে পরে যাত্রীবাহী বাস দাঁড়ানোর জন্য ‘বাস বে’ তৈরি করে দেওয়া হয়। যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য ছোট শেডও বানিয়ে দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, বাসগুলির সেখানেই দাঁড়ানোর কথা। যাত্রী ওঠানো-নামানো শেষ হয়ে গেলে ফের জাতীয় সড়কে ওঠার কথা। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে তা হয় না। স্থানীয় হোক বা দূরপাল্লার, সরকারি-বেসরকারি সব বাসই দাঁড়াচ্ছে মুচিপাড়া-জাতীয় সড়কের তে’মাথার মোড়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরে জাতীয় সড়কের উপর ব্যস্ততম মুচিপাড়া ও ডিভিসির মোড়। ডিভিসি মোড়ে অপেক্ষাকৃত কম বাস দাঁড়ানোয় অসুবিধা বিশেষ হয় না। কিন্তু মুচিপাড়া মোড়ে দুর্গাপুর স্টেশন, বিধাননগর এবং বামুনাড়ার দিক থেকে সব ক’টি রাস্তা এসে মিশেছে। ফলে যানবাহন ও পথচারীর সংখ্যা অনেক বেশি। বাসগুলি এসে রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামাপদ মজুমদার, মীনাক্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “রাস্তা দখল করে বাস না দাঁড়ালে সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। ট্রাফিক পুলিশের এই দিকটা দেখা উচিত।” |
২০১১ সালের মার্চ মাসে মুচিপাড়া মোড়ে লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া শেখ রাজা আনসারির। ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন বাসিন্দাদের একাংশ। লরিটিতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের আশ্বাস দিয়েছিল, ওই মোড়ে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হবে। সেইমতো দিনকয়েক কড়া নজরদারিও চালিয়েছিল তারা। কিন্তু কিছু দিন যেতেই পরিস্থিতি আবার আগের মতো হয়ে যায়। অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ডের নির্দিষ্ট জায়গায় বাস না দাঁড়ানোয় জাতীয় সড়কের অনেকটা জায়গা প্রায় সারাদিনই আটকে থাকে। বিপাকে পড়েন পথচারী, সাইকেল আরোহীরা।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে ট্রাফিক পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় পুরোমাত্রায় কাজ শুরু করেছে। এসমগ্র এলাকাকে ৮ টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রতিটি অঞ্চলে ৮ জন ওসি নিয়োগ করা হয়েছে। মুচিপাড়ার গুরুত্ব অনুধাবন করে ‘ওসি (মুচিপাড়া)’ পদও রাখা হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে মুচিপাড়া ও জাতীয় সড়ক মোড়ে যাতে বাস না দাঁড়ায় সে ব্যাপারে নজরদারি চালানো হয়েছে। অধিকাংশ বাসই নিয়ম মানতে শুরু করেছে। যদিও ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা কম থাকলে মাঝেমধ্যেই দু’একটি বাস দাঁড়িয়ে পড়ছে রাস্তায়।
এসিপি (ট্রাফিক) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “নজরদারি আরও কড়া করা হবে। একটি বাসও যাতে জাতীয় সড়কে না দাঁড়ায় তা দ্রুত নিশ্চিত করা হবে।” |