চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির ১৩ কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন। এর ফলে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতি কংগ্রেসের হাত ছাড়া হল বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা বলেন, “চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির ১৩ কংগ্রেস সদস্য আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। ওই পঞ্চায়েত সমিতি এখন আমাদের দখলে।” জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি অসীম সাহা অবশ্য সোজাসুজি বলে দিয়েছেন, “এতদিন যাঁরা কংগ্রেসের কাছ থেকে সমস্ত সুযোগসুবিধা নিয়ে এসেছেন, তাঁরা সম্পূর্ণ ব্যক্তি স্বার্থে অন্য দলে যোগ দিলেন।” রবিবার বিকেলে পঞ্চায়েত সমিতির এই কংগ্রেস সদস্যেরা কলকাতার নিজাম প্যালেসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁদের সঙ্গেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য তথা নদিয়া জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক পরিমল বিশ্বাসও। চাপড়া এলাকার প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা ছিলেন পরিমলবাবু। তিনি বলেন, “চাপড়া পঞ্চায়েত সমিতির ১১ কংগ্রেস সদস্যের সঙ্গে আমিও এই দিন নিজাম প্যালেসে গিয়েছিলাম। ব্যক্তিগত কারণে পঞ্চায়েত সমিতির দু’জন যেতে পারেননি। তবে তাঁরাও তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়ে মুকুলবাবুর কাছে জমা দেওয়া চিঠিটিতে স্বাক্ষর করেছেন।” তিনি বলেন, “এখন ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই তৃণমূলই ওই পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ন্ত্রণ করবে।” এই পঞ্চায়েত সমিতিতে এর আগেও চার কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে এই পঞ্চায়েত সমিতির ৩৮টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের সদস্য সংখ্যা ছিল ২৩। সিপিএমের ৯। তৃণমূল জিতেছিল ৪টি আসনে। ১টি করে আসন ছিল বিজেপি ও সিপিএমের দখলে। পরে এক জন সিপিএম সদস্যের মৃত্যুর পরে উপনির্বাচনে জয়ী হন কংগ্রেসের প্রার্থী। সিপিএমের এক জন সদস্য এরপরে তৃণমূলে যোগ দেন। তাই তখন তৃণমূলের সদস্য দাঁড়ায় ৫ জনে। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪। সিপিএমের কমে দাঁড়ায় ৭। কিন্তু এ ছাড়াও কংগ্রেসের চার সদস্য যোগ দেন তৃণমূলে। তাতে তৃণমূলের আসন সংখ্যা হয় ৯। কংগ্রেসের ২০। এ বার রবিবার ১৩ জন কংগ্রেস সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে গেল। তৃণমূলের দাবি, এখন তাঁদের সদস্য সংখ্যা ২২ এবং কংগ্রেসের ৭। চাপড়া বরাবরই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। সেই অর্থে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সংখ্যার হিসেবে তৃণমূলের শক্তি এখানে কমই ছিল। বিধানসভা নির্বাচনে জোটের প্রার্থী রুকবানুর রহমানই এখান থেকে জেতেন। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের গোঁজ প্রার্থী শেষ মুহূর্তে নাম প্রত্যাহার করে নেন। পরিমলবাবু বলেন, “কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছিল, ওই দলে থেকে সিপিএমের বিরোধিতা করা যাবে না। আমরা মনে করছি যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই বাংলায় সুদিন ফিরে আসবে।” জেলা কংগ্রেসের সহ সভাপতি অসীমবাবুর দাবি, চাপড়ার কংগ্রেস কর্মীরা কিন্তু পরিমলবাবুদের সঙ্গে নেই। |