বৈঠকের আগেও বন্ধের প্রচারে দু’পক্ষই
রাজ্য সরকারের আলোচনার ডাকে সাড়া দিলেও তরাই-ডুয়ার্সে বন্ধ-পাল্টা বন্ধ নিয়ে জোরদার প্রচার চালাচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও মোর্চা-বিরোধী শিবির।
আজ, রবিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে ‘আদিবাসী বিকাশ পরিষদ’ নেতৃত্বাধীন ‘তরাই-ডুয়ার্স জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। বৈঠকে থাকার কথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবেরও। সরকার পক্ষ পরে কথা বলবে মোর্চার নেতৃত্বে তৈরি ৩২টি সংগঠনের ‘যৌথ মঞ্চ’-এর সঙ্গেও।
তার আগে শনিবার ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এ তরাই-ডুয়ার্সের এলাকা অন্তর্ভুক্তির দাবি খতিয়ে দেখার বিরোধিতায় মালবাজারে এক মিছিলের আয়োজন করে ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’। যোগ দেন তরাই-ডুয়ার্সের ১৯টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। হাজির ছিলেন ‘আদিবাসী বিকাশ পরিষদ’-এর রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকেও। মিছিলের পরে তিনি বলেন, “তরাই-ডুয়ার্সের কোনও এলাকা জিটিএ-তে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। এ কথা রাজ্য সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। তা হলেই আমরা বন্ধ (১০ এবং ১১ এপ্রিল) প্রত্যাহার করব। না হলে বন্ধ হবেই। আমি রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যোগ দিচ্ছি না। তবে আমাদের কমিটির প্রতিনিধিরা সেখানে এ কথাই জানাবেন।” কমিটির আহ্বায়ক তেজকুমার টোপ্পো বলেন, “বন্ধের সমর্থনে ৯ এপ্রিল নাগরাকাটায় মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।”
পক্ষান্তরে, ‘যৌথ মঞ্চ’ও কমিটির বন্ধের বিরোধিতায় নানা এলাকায় ঘরোয়া সভা করছে। সেই সঙ্গে জিটিএ-তে তরাই-ডুয়ার্সের কিছু মৌজা অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে আগামী ১৮ ও ১৯ এপ্রিল তারা যে পাল্টা বন্ধ ডেকেছে, তাতে সামিল হওয়ার জন্য ঘরে-ঘরে প্রচারও চালাচ্ছে। মিছিল-কর্মসূচিও রয়েছে তাদের। মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক শুকরা মুণ্ডা বলেছেন, “আগে কমিটি বন্ধ তুলুক। তার পরে আমরা তুলব। আমরাও রাজ্য সরকারকে সে কথা জানিয়েছি। ফের জানাব।”
দু’পক্ষই কার্যত ‘অনড়’ মনোভাব দেখালেও হাল ছাড়তে নারাজ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। সরকারি সূত্রের খবর, আজ, রবিবার বিকেলে শিলিগুড়িতে দু’পক্ষের আন্দোলনকারীদেরই বুঝিয়ে বন্ধ থেকে নিরস্ত করতে চেষ্টা চালাবেন শিল্পমন্ত্রী ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। প্রথমে কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে। পরে ‘যৌথ মঞ্চ’-এর কাছেও জনজীবন স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ জানানো হবে। গৌতমবাবু বলেন, “উন্নয়নে যাতে বিঘ্ন না হয়, সে দিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। জোর দিতে হবে আলোচনার টেবিলেই সমাধানসূত্র খোঁজায়।”
সরকারি তরফে বন্ধ প্রত্যাহার করানোর চেষ্টা চললেও দু’পক্ষের প্রচারে তরাই-ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই উদ্বিগ্ন। কারণ, সুবাস ঘিসিংয়ের আমলে পাহাড়ের স্বশাসিত এলাকার আওতায় তরাই-ডুয়ার্সের এলাকার অন্তর্ভুক্তির দাবি ওঠেনি। মোর্চা সেই দাবি তোলার পরে পাহাড়ের আন্দোলনের ‘আঁচ’ পড়ে সমতলেও। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে দফায়-দফায় বন্ধ-অবরোধে পাহাড়বাসীর পাশাপাশি, জেরবার হয়েছেন তরাই-ডুয়ার্সের বাসিন্দারা। পাহাড়ের ‘অস্থিরতা’র ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে তরাই-ডুয়ার্সের অর্থনীতিতেও। সেই কারণেই পাহাড় ও লাগোয়া তরাই-ডুয়ার্সের ‘ভুক্তভোগী’ বাসিন্দাদের অনেকেই স্থানীয় নেতাদের কাছে ‘বন্ধ’ না ডেকে অন্য উপায়ে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.