বাচ্চা কোলে ওয়ার্ডে দিদিমা, মাথায় ভাঙল ছাদের চাঙড়
ছাদের চাঙড় খসে জখম হলেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক শিশুর দিদিমা। শনিবার সকালে শিশু ওয়ার্ডে ওই দুর্ঘটনার সময়ে ছ’মাসের শিশুটি তাঁর কোলেই ছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে গিয়েছে।
সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ যখন ওই দুর্ঘটনা ঘটে, ওয়ার্ডে ১৭১টি শিশু ভর্তি ছিল। আচমকা প্রচণ্ড শব্দে দু’টি পাখা-সহ বড় একটি চাঙড় ভেঙে পড়ে। মাথায় চোট পেয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়েন বেলিয়াতোড়ের দেউলিবাই গ্রাম থেকে আসা বছর পঞ্চাশের ছায়া মান্না। আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু হয়ে যায়। সন্তান বুকে চেপে দৌড়ে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যান বেশ কিছু মা।
চাঙড় ভেঙে পড়ার পরে শিশু ওয়ার্ড।
যেখানে চাঙড় খসেছে, সেই জায়গায় থাকা ১২টি বাচ্চাকে পরে ‘নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে’ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ প্রায় নিয়ম করেই ওঠে। কিন্তু এ রকম দুর্ঘটনা ইদানীং কালে এই প্রথম। মাস সাতেক আগে প্রসূতি বিভাগে ছোট আগুন লাগলেও ক্ষয়ক্ষতি বিশেষ হয়নি। দুর্ঘটনার পরেই রোগীদের আত্মীয়-পরিজনেরা হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডুকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান।
সুপার বলেন, “শিশু বিভাগের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ছাদের প্রায় ১২ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া চাঙড় ভেঙে
জখম ছায়া মান্না।
পড়েছে। হাসপাতাল ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের পূর্ত দফতরের। তাদের কাছে কারণ জানতে চেয়েছি।” রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র রূপেশ বারুই আবার দাবি করেন, “দিন দশেক আগেও আমরা ছাদটি পরিদর্শন করেছি। সে সময়ে দুর্বলতা নজরে আসেনি।” তাঁর মতে, “ছাদের ওই অংশে ঢালাইয়ের লোহায় মরচে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে হাসপাতালে বসেই ছায়াদেবী বলেন, “ছ’মাসের নাতিকে কোলে নিয়ে ওয়ার্ডে ঘোরাঘুরি করছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ করে চাঙড় ভেঙে পড়ে। কপাল জোরে বাচ্চাটা বেঁচে গিয়েছে।” রক্তপাত বন্ধ করতে ছায়াদেবীর মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দিতে হয়েছে।
আতঙ্কে শিশুদের নিয়ে বেরিয়ে আসছেন মায়েরা।
ভিতরে কোনও চোট লেগেছে কি না, তা জানতে স্ক্যান করানো হয়েছে। তিনি তো বটেই, ওয়ার্ডের অনেকেই এখনও সেই মুহূর্তটির কথা ভাবলে শিউরে উঠছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, অন্য এক শিশুর বাবা বিশ্বনাথ পাল বলেন, “বিছানা থেকে খানিক দূরেই চাঙড়টা খসে পড়েছে। বাচ্চাগুলোর উপরে পড়লে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে যেত।”
রোগীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুপুরে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি অরূপ বন্দোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, “কেন আগে থেকে ছাদ সারানোর ব্যবস্থা হয়নি? এর জবাব কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে।” হাসপাতাল সুপার বলেন, “দ্রুত ওই ছাদ সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। পূর্ত দফতরের কর্মীদের নিয়ে অন্য ওয়ার্ডগুলির ছাদের অবস্থাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে এখন শিশুরা সুরক্ষিত আছে।”

ছবি: অভিজিৎ সিংহ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.